অ্যাপল সবসময়ই তাদের প্রিমিয়াম স্মার্টফোনে নতুনত্ব যোগ করে থাকে। ২০২৫ সালে iPhone 17 সিরিজ উন্মোচনের সাথে সাথে কোম্পানি এনেছে একটি ভিন্নধর্মী চমক — iPhone 17 Air। এটি Apple-এর ইতিহাসে সবচেয়ে পাতলা iPhone, যেখানে আধুনিক প্রযুক্তি, দৃষ্টিনন্দন ডিজাইন এবং উন্নত পারফরমেন্স একসাথে মিলিত হয়েছে। 

ডিজাইন ও নির্মাণ
iPhone 17 Air-এর সবচেয়ে বড় আকর্ষণ এর পাতলাত্ব। মাত্র ৫.৬ মিলিমিটার পুরুত্ব ও ১৬৫ গ্রাম ওজনের কারণে এটি হাতে নিলে অত্যন্ত হালকা অনুভূত হয়। স্মার্টফোনের ফ্রেম তৈরি হয়েছে গ্রেড ৫ টাইটেনিয়াম দিয়ে, যা একদিকে মজবুত আবার অন্যদিকে হালকা। ফোনের সামনে ও পিছনে রয়েছে নতুন Ceramic Shield গ্লাস, যা স্ক্র্যাচ ও ফাটল প্রতিরোধে আগের চেয়ে অনেক উন্নত। সামনে রয়েছে Ceramic Shield 2, যা স্ক্রিনকে তিন গুণ বেশি টেকসই করেছে। এর ফলে ব্যবহারকারীরা নিশ্চিন্তে দৈনন্দিন ব্যবহার করতে পারবেন। এতে যুক্ত করা হয়েছে Action Button এবং বিশেষ Camera Control, যা দ্রুত ক্যামেরা চালু বা অন্যান্য শর্টকাট ব্যবহারে সুবিধা দেবে।

রঙের ভ্যারিয়েন্ট
ফোনটি পাওয়া যাবে চারটি মনোমুগ্ধকর রঙে: স্পেস ব্ল্যাক,  ক্লাউড হোয়াইট, লইট গোল্ড,  স্কাই ব্লু । 

ডিসপ্লে
iPhone 17 Air-এ আছে ৬.৫ ইঞ্চি Super Retina XDR ডিসপ্লে। এতে রয়েছে ProMotion প্রযুক্তি যা ১২০ হার্জ পর্যন্ত রিফ্রেশ রেট সমর্থন করে। স্ক্রলিং, গেমিং কিংবা ভিডিও প্লেব্যাক সবকিছুই হবে আরও স্মুথ ও জীবন্ত। ডিসপ্লের উজ্জ্বলতা সর্বোচ্চ ৩০০০ নিট পর্যন্ত পৌঁছায়, যা রোদে দাঁড়িয়ে ব্যবহার করলেও পরিষ্কার দেখা যায়। Always-On ডিসপ্লে প্রযুক্তি ফোন ব্যবহার না করলে রিফ্রেশ রেট কমিয়ে বিদ্যুৎ খরচ কমায়। 

পারফরমেন্স
ফোনটিতে রয়েছে সর্বাধুনিক A19 Pro চিপসেট, যা আগের যেকোনো আইফোনের চেয়ে দ্রুত ও শক্তিশালী। এতে নতুন C1X মডেম ও N1 নেটওয়ার্কিং চিপ যুক্ত হয়েছে, যা 5G ও Wi-Fi 7 কানেক্টিভিটিকে আরও স্থিতিশীল ও দ্রুত করেছে। স্টোরেজ শুরু হচ্ছে ২৫৬ জিবি থেকে এবং আরও আছে ৫১২ জিবি ও ১ টেরাবাইট ভ্যারিয়েন্ট। RAM অফিশিয়ালি উল্লেখ না করা হলেও Apple Pro মডেলের সমমানের শক্তিশালী কনফিগারেশন ব্যবহার করেছে বলে জানা যায়। 

ক্যামেরা
প্রধান ক্যামেরা
iPhone 17 Air-এ রয়েছে ৪৮ মেগাপিক্সেল Fusion মেইন ক্যামেরা, যা ২x টেলিফটো সুবিধা সহ আসে। Fusion প্রযুক্তি অল্প আলোতেও দুর্দান্ত ছবি তুলতে সহায়তা করে।

সেলফি ক্যামেরা
ফোনটির সামনে রয়েছে ১৮ মেগাপিক্সেল Center Stage ক্যামেরা। এটি ভিডিও কলে বা সেলফি তোলার সময় স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফ্রেম সামঞ্জস্য করে নেয়। এছাড়াও রয়েছে Dual Capture ফিচার, যার মাধ্যমে একসাথে সামনে ও পেছনের ক্যামেরা দিয়ে ভিডিও ধারণ করা সম্ভব।

ভিডিও
ভিডিও শুটিংয়ের জন্য Ultra-Stabilization যুক্ত করা হয়েছে, ফলে হাতে ধরে ভিডিও করার সময়ও দৃশ্য কাঁপবে না। 

ব্যাটারি
পাতলা ডিজাইন সত্ত্বেও Apple দাবি করছে যে ফোনটিতে সারা দিনের ব্যাটারি ব্যাকআপ পাওয়া যাবে। ভিডিও প্লেব্যাক টাইম প্রায় ২৭ ঘণ্টা পর্যন্ত যেতে পারে। এছাড়া MagSafe চার্জিং ও দ্রুতগতির ওয়্যারলেস চার্জিং প্রযুক্তিও সমর্থন করে। 

সফটওয়্যার
iPhone 17 Air আসছে নতুন iOS 26 অপারেটিং সিস্টেম নিয়ে। এর সাথে থাকছে Apple Intelligence ফিচার, যা ছবি এডিটিং, টেক্সট সাজেশন এবং পার্সোনালাইজড অভিজ্ঞতাকে আরও স্মার্ট করে তুলবে।
ফটোস অ্যাপে যুক্ত হয়েছে নতুন Clean Up ফিচার, যা অবাঞ্ছিত অবজেক্ট সরাতে সাহায্য করে। এছাড়া ক্যামেরার Center Stage ফিচার ভিডিও কল ও ভ্লগিংকে করবে আরও আকর্ষণীয়। 

সীমাবদ্ধতা

- পাতলা হওয়ার কারণে ব্যাটারি ক্যাপাসিটি কিছুটা সীমিত হতে পারে
- প্রো মডেলের তুলনায় টেলিফটো ক্যামেরা সীমিত
- শুধুমাত্র eSIM সাপোর্ট, ফিজিক্যাল সিম ব্যবহারকারীদের জন্য অসুবিধা
- প্রিমিয়াম দাম, বিশেষ করে বাংলাদেশে ক্রেতাদের জন্য অনেক ব্যয়বহুল

iPhone 17 Air নিঃসন্দেহে Apple-এর অন্যতম বিপ্লবী ফোন। এর পাতলা ও হালকা ডিজাইন, শক্তিশালী চিপসেট, দারুণ ক্যামেরা এবং আধুনিক সফটওয়্যার একে স্মার্টফোন জগতে নতুন মানদণ্ড তৈরি করেছে। যারা আলট্রা-স্লিম কিন্তু শক্তিশালী স্মার্টফোন খুঁজছেন, তাদের জন্য iPhone 17 Air হতে পারে নিখুঁত পছন্দ। 
তবে সীমিত ব্যাটারি এবং উচ্চ মূল্যের কারণে সবার নাগালে এটি সহজে পৌঁছাবে না। কিন্তু প্রযুক্তি ও ডিজাইনের সমন্বয়ে Apple আবারও প্রমাণ করেছে কেন তারা স্মার্টফোন দুনিয়ার নেতৃত্বে রয়েছে। 

সূত্র ও ছবিঃ অ্যাপল