
রাস্কিন বন্ড ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত ভারতীয় লেখক।বন্ডের জীবনের বেশির ভাগ সময় কেটেছে হিমালয়ের পাদদেশে পাহাড়ী ষ্টেশনে। তাঁর প্রথম উপন্যাস “দ্য রুম অন দ্য রুফ” তিনি লিখেছিলেন ১৭ বছরবয়সে এবং এটি প্রকাশিত হয়েছিলো যখন তার বয়স ২১ বছর। তিনি তার পরিবার নিয়ে ভারতের মুসৌরিতে থাকেন। Our Trees Still Grow in Dehra লেখার জন্য ১৯৯২ সালে তিনি সাহিত্য অ্যাকাডেমি পুরষ্কার পান। ১৯৯৯ সালে পদ্মশ্রী এবং ২০১৪ সালে পদ্মভূষণ পুরষ্কারে ভূষিত হন। তিরিশটির বেশি উপন্যাস লিখেছেন তিনি। লিখেছেন প্রচুর নিবন্ধও। রাস্কিন বন্ডের উপন্যাস ‘অল রোডস লিড টু গঙ্গা’ একটি আলোচিত উপন্যাস। প্রাণের বাংলায় এই উপন্যাসের ধারাবাহিক অনুবাদ করেছেন এস এম এমদাদুল ইসলাম। ‘হিমালয় ও গঙ্গা’ নামে উপন্যাসের ধারাবাহিক অনুবাদ এখন থেকে প্রকাশিত হবে প্রাণের বাংলায়।
আপনি যদি মন্দাকিনী উপত্যকায় উঠে এসে পরে অলকানন্দা উপত্যকার দিকে যান তো সঙ্গে সঙ্গে এই দুই জায়গার বৈপরীত্য আপনার চোখে পড়বে। মন্দাকিনী সুবোধ, উদ্ভিদে পরিপূর্ণ, এর বহু জায়গা চারণভূমিতুল্য; পক্ষান্তরে অলকানন্দা ভীতিকর, গিরিচূড়ায় পূর্ণ, অমঙ্গলের ইঙ্গিতবাহী, বসবাস ও জীবিকার জন্য অনুপযোগী একটি অঞ্চল।
এমনকি আমরা যখন চামলি ছেড়ে বদ্রিনাথের উদ্দেশে প্যাঁচানো পথে উঠে যেতে থাকি তখনো অল্প পরপর পরিবেশ বৈচিত্রে দারুণ পরিবর্তন ঘটে যায়। এখন আর সবুজ মাটি ঢালু হয়ে নেমে গিয়ে নদীর পাড়ে মিশতে দেখা যায়না। এখানে পাহাড়ি পথ বিপদজনকভাবে খাঁড়া ও সরু হয়ে আসে, আর অন্যদিকে নিচে নদী সংকীর্ণ গিরিসংকট বেয়ে গর্জে ছুটে চলে কখন গিয়ে দেবপ্রয়াগে ভাগিরথীর সঙ্গে মিশবে।
বদ্রিনাথ ভারতের চারটি প্রসিদ্ধ ধাম বা মহাপবিত্র তীর্থস্থানের একটি (অন্য তিনটি হলো-রামেশ্বরম, দ্বোয়ারকা এবং জগন্নাথপুরী)। কোনো তীর্থযাত্রীর জন্য তার পূণ্যতম স্থানে ভ্রমণের বিষয়টি উত্তেজনাকর, এমনকি চিত্তগ্রাহীও বটে; কিন্তু নিয়মিত বাসিন্দাদের জন্য এখানে এই কঠোর পার্বত্য পরিবেশে বসবাসের প্রতিটি দিন একটি করে যুদ্ধ। অবাক হওয়ার কিছু নেই যে গাড়োয়ালের অসংখ্য যুবক সেনাবাহিনীতে নাম লেখায়। এখানকার ঊষঢ় পাথুরে আবহাওয়ায় ফসল তেমন জন্মায়ই না; যা-ও হয় তার জন্য আবহাওয়ার দিকেই চেয়ে থাকতে হয় বেশি। বছরের বেশির ভাগ সময় এখানকার জমি অনাবাদী থাকে। দুর্ভাগ্যবশত নদীর পানি নিচের দিকেই নামে, ঊর্ধমুখী হয়ে প্রবাহিত হয় না।
রাতযাপনের জন্য পিপলকোটি থামি আমরা, কিন্তু এখানেও গাড়োয়াল জীবনের সহজাত কঠিন বাস্তবতা তাড়া করে ফেরে আমাদের। বাসভর্তি তীর্থযাত্রী এসে থামে। গাড়োয়াল মণ্ডল বিকাশ নিগমের রেস্টহাউজটি নেহায়েত ছোটো নয়, তাছাড়া এখানে ছোটোখাটো আরো হোটেল, ধর্মশালা ইত্যাদি রয়েছে। ব্যস্ত রাস্তাটির একটু পরেই একটা ছোটো হাসপাতাল। সন্ধ্যায় এখানে এক মহিলার সঙ্গে দেখা যে কিনা তার স্বামীর মৃতদেহ পাহারা দিচ্ছে। মৃতদেহটি উঠানে একটা বেঞ্চির উপর রাখা। অল্প ক’ফুট দূরেই রাস্তায় ভিড় করে আছে তীর্থযাত্রীরা উৎসবের ভাব নিয়ে, সামান্য মাথা উঁচু করে খাটো দেয়ালটির এই ধারে কী মর্মান্তিক দৃশ্য রয়েছে কেউ তা চেয়েও দেখছেনা।
হেলং-এর কাছের গাঁ থেকে এসেছে মহিলাটি। সকালে ক্ষয়রোগে আক্রান্ত স্বামীটির অবস্থার অবনতি হওয়ায় সে তাকে কাছের শহরে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেয় চিকিৎসার জন্য। শীর্ণদেহী মানুষটিকে পিঠে চাপিয়ে মোটরগাড়ির রাস্তাঅব্দি বয়ে আনতে পেরেছিলো সে। পরে কিছু পয়সার বিনিময়ে একটা ট্যাক্সিতে চাপিয়ে তাকে নিয়ে পিপলকোটিতে আসে। কিন্তু ছোটো হাসপাতালটিতে পৌঁছার আগেই তার স্বামীর মৃত্যু ঘটে। এখানে কোনো মর্গ না থাকায় উঠানে সে মৃতদেহ নিয়ে অপেক্ষা করতে থাকে সকাল হওয়ার আর গাঁ থেকে লোকজন আসার। পরদিন কিছু লোক আসে দেখতে পাই আমরা। এরা মৃতদেহ নিয়ে ধীরে ধীরে আঁকাবাঁকা পথ ধরে শ্মশানের দিকে হাঁটতে থাকে। মহিলাটিকে আর দেখিনি আমরা। তার বাচ্চারা ক্ষুধার্ত, তাকে দ্রুত বাড়ি ফিরতে হবে।
পিপলকোটিতে গরম বেশ (এখানে পিপল গাছের অনুপস্থিতি প্রকটভাবে অনুভূত হয়), কিন্তু বদ্রিনাথ মন্দির স্থাপনাসমুহের শীতকালীন প্রতিষ্ঠান যোশিমঠ-এর অবস্থান সমুদ্র-পৃষ্ঠের ৬,০০০ ফুট উঁচুতে হওয়ায় সেখানকার আবহাওয়া আরামপ্রদ। এখানে এখন মোটামুটি একটা শহর গড়ে উঠেছে, আশেপাশের পাহাড়গুলো প্রায় বৃক্ষশূন্য হলেও সেখানে কালের সাক্ষী হয়ে টিকে আছে একটা বিশালাকৃতির বৃক্ষ। এটা একটা প্রাচীন মালবেরি বৃক্ষ, কল্পতরু নামে পরিচিত। কয়েকশ’ বছর আগে এর নিচে বসে ধ্যান করতেন শংকরাচার্য। দু’হাজার বছরেরও বেশি বয়স্ক হবার খ্যাতি রয়েছে এই গাছের। এর ব্যপ্তি মুসৌরিতে আমার চার কক্ষের ফ্ল্যাট-বাড়িটির চাইতে বেশি সন্দেহ নেই। জনাষাটেক তীর্থযাত্রী পরষ্পরের হাতে হাত ধরে এর বেড় পেতে পারেন।
এর আগেও আমি কিছু বড়ো গাছ দেখেছি, তবে এটি তার সবগুলোর চাইতে পুরনো ও বৃহত্তর। আমাদের সৌভাগ্য যে শংকরাচার্য এই গাছের নিচে বসে ধ্যান করেছিলেন, নয়তো এটি হয়তো কবেই আশেপাশের অন্যান্য, একদা বর্তমান, গাছের মতোনিশ্চিহ্ন হয়ে যেতো। একটা ছেলে আমাকে মনে করিয়ে দিল যে মালবেরি গাছটি আসলে একটি মানত বা আকাক্সক্ষাপূরণ-গাছ, কাজেই আমি মানত করি-অন্যান্য গাছও যাতে এই গাছটির মতো হতে পারে।
‘তুমি মানত করেছ?’ ছেলেটিকে জিজ্ঞেস করলাম আমি।
‘আমি মানত করেছি যে আপনি আমাকে একটা টাকা দেবেন,’ বললো ছেলেটি।
তাৎক্ষণিকভাবে ছেলেটির ইচ্ছাপূরণ হলো। আমার ইচ্ছেটা এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের হাতে তোলা থাকলো। তবে ছেলেটি মানত বিষয়ে একটা দারুণ শিক্ষা আমাকে দিয়েছে বটে।
যোশিমঠ জায়গাটা যথেষ্ট বড়োই হবে, কারণ নভেম্বর মাসে বদ্রিনাথের প্রায় পুরোটাই চলে আসে এখানে।বদ্রিনাথের মন্দির শীতকালে ছয়মাসের জন্য অগম্য হয়ে যায়। যোশিমঠে সেনাবাহিনী ও পি. ডাব্লিউ. ডি.-এর স্থাপনাও রয়েছে বেশ। এটা একদম নিশ্চিন্ত আবাস না হলেও, অল্প ক’দিনের জন্য আরামে থাকার সুযোগ-সুবিধার অভাব নেই। অলকানন্দা ও ঢাউলি নদীর মিলনস্থলের উপরে খাড়া পাহাড়ের গায়ে অবস্থিত এই জায়গাটি আর আগের মতো নেই। পঞ্চাশ বছর আগে যখন ফ্রাঙ্ক স্মাইদ যোশিমঠ ভ্রমণ করেছিলেন তখন সবকিছু অন্যরকম ছিলো। তিনি জায়গাটিকে এভাবে বর্ণনা করেছেন, ‘ছোট্ট কুৎসিত একটা জায়গা…পাহাড়ের গায়ে বিশ্রীভাবে লেপ্টে আছে। আদিমকালের কিছু দোকান প্রধান সড়কের ধারে সারি বেঁধে আছে, রাস্তা এবড়োখেবড়ো, আবার তা অনেক জায়গায় বর্ষার পানিতে ধুয়ে গেছে। তীর্থযাত্রীরা নোংরা ও দুর্গন্ধময় একতলা বিশ্রামঘরে রাত কাটায়।’
এ হলো যোশিমঠের পুরনো চেহারা। এখন অবস্থা বদলে গেছে। ছোটো ছোটো হোটেল হয়েছে, হয়েছে আধুনিক দোকানপাট, সিনেমা; ষাটের দশকের গোড়ার দিকে তীর্থযাত্রীদের পায়ে হাঁটা রাস্তার পরিবর্তে গাড়ি চলার পাকা রাস্তা হবার পর থেকে এই উন্নতি। এই রাস্তায় এখন যাত্রীরা গাড়ি করে বদ্রিনাথ চলে আসতে পারে। আগের মতো আর পায়ে হেঁটে আসা ক্লান্ত শ্রান্ত যাত্রীরা এসে ঝপ করে কল্পতরুর নিচে বসে পড়েনা। তারা এখন বাস বা বিলাসবহুল কোচ থেকে নেমে রাস্তার ধারে যে কোনো এক রেস্তোঁরায় কোলা বা থামস্-আপ পান করে।
আজকের এই আরামদায়ক ভ্রমণের সঙ্গে পঞ্চাশ বছর আগের অবস্থা তুলনা করতেই পারেন। ফ্রাঙ্ক স্মাইদ আরো লিখেছেন, ‘এসব তীর্থযাত্রী তাদের যাত্রা অব্যহত রাখে…কেউ কেউ কুলিদের কাঁধে চেপে যায় বেশ মজা করেই, কেউ পায়ে হেঁটে মলিন পোশাকে চলে, কেউবা রোগাক্রান্ত হয়ে অনেকটা হামা দিয়েই এগোয়…ইউরোপিয়ানরা যারা এইসব বর্ণনা পড়েছেন বা এখানে ঘুরে গেছেন তারা বুঝতে পারেন না যে এইসব সাধারণ লোকের মাথায় এধরনের কষ্টসাধ্যভ্রমণের ব্যাপারে কোন্ জিনিসটা কাজ করে, এরা মূলত চাষাভূষা লোকজন সব। অজানা ভয় এবং বিস্ময়ানুসন্ধান কৌতূহলই বোধহয় এর কারণ। ফলে তীর্থযাত্রা একধরনের অভিযানে পরিণত হয়। সুন্দর করে বানানো চওড়া পথের সর্বত্র নানান বিপদ ওৎ পেতে থাকে। পাহাড়ের উপর থেকে ক্রুদ্ধ দেবতারা যেকোনো সময়ে ভূমিধ্বসের নামে পাথর গড়িয়ে দিতে পারেন হতভাগ্য পথিকদের উপর। ইউরোপিয়ানদের কাছে এটা নিছক বদ্রিনাথের পথে হাঁটা, আর ভক্তদের কাছে তা অনেক অনেক বেশি।’
স্মাইদ বিষ্ণুপ্রয়াগের উপরে এসে অলকানন্দা ছেড়ে ভাইয়ুন্ডার উপত্যকায় প্রবেশ করেন। এটি উদ্ভিদ-প্রেমীদের স্বর্গ; তিনি এটাকে ফুলের উপত্যকা নামে আখ্যায়িত করেছেন। এই উপত্যকার সবুজের সমারোহ দেখে তি
নি এর প্রেমে পড়ে যান এবং বাইরের জগতের সঙ্গে এর পরিচয় করিয়ে দেন। উদ্ভিদপ্রেমী ও ট্রেকারদেরকে জায়গাটি এখনো টানে। বিভিন্ন বর্ণের প্রিমুলা (ফুল বিশেষ), বুনো জারেনিয়াম, পাথর আঁকড়ে জন্মানো স্যাক্সিফ্রাজ, হলুদ ও লাল স্ট্রবেরি সদৃশ পোটেনটিলা, তুষার-ধবল অ্যানিমোনি, ডেলফিনিয়াম, ভায়োলেট, বুনো গোলাপ এবং আরো কতো হৃদয়-কাড়া, মনোহারি ফুলের মেলা সেখানে পুষ্পপ্রেমীদের জন্য।
‘ফুল না দ’লে একটা পদক্ষেপও সম্ভব নয়।’ একথা এখন সম্ভবত আর খাটেনা, কারণ হালের বছরগুলোতে ভাইয়ুন্ডারের এই স্থান বহু পদভারে পিষ্ট হয়েছে।গাড়োয়ালে আরো অনেক জায়গা রয়েছে যেগুলো উদ্ভিদে সমৃদ্ধ-হার-কি-দুন, হারসিল, তুংনাথ, খিরাউন উপত্যকা (এখানে কিছু সুগন্ধি নির্যাসি উদ্ভিদ আটফুট পর্যন্ত উচ্চতাপ্রাপ্ত হয়)-তবে ভাইয়ুন্ডারে বর্ষার শেষে উদ্ভিদ ও বুনোফুলের যে বিচিত্র এবং ঘন সমাবেশ ঘটে তা অন্যত্র দুর্লভ। এটিকে পৃথিবীর সেরা উপত্যকার একটি বললে অত্যুক্তি হবেনা। গিরিদৃশ্যপ্রেমীদের জন্য ভাইয়ুন্ডার হারিয়ে যাওয়ার জায়গা। তবে তীর্থযাত্রীর লক্ষ একটিই-বদ্রিনাথ, যেখানে দেবতারা অবস্থান করেন, আর যেখানে মেলে মুক্তি। সংসারত্যাগী সন্ন্যাসব্রত নেয়া ভক্তরা কঠিন পন্থা বেছে নেয় তার সিদ্ধি লাভের জন্য। এমন একজনকে দেখছি আমরা এখন। সে সটান শুয়ে পড়ছে মাটিতে, তারপর আবার উঠে দাঁড়াচ্ছে। এরকম করতে করতে সে পৌঁছাবে বদ্রিনাথ থেকে হৃষিকেশ, রোদ-বৃষ্টি, পথের ধূলা, মাটিতে ছড়িয়ে থাকা ধারালো কঙ্কর, সব উপেক্ষা করে।
তবে সবাই এমন নয়। গেরুয়া বসনে এক পণ্ডিতমশাই তাঁকে আমাদের বাহনে করে বদ্রিনাথ পৌঁছে দেয়ার অনুরোধ জানালেন, তুলে নিলাম তাঁকে আমরা। পুরষ্কার হিসেবে তিনি পুরো রাস্তা ধরে আমাদেরকে বেদ থেকে বয়ান করে শুনালেন। তিনি জানালেন বেদ শাস্ত্রের উড্ডয়ন বিষয়ক অংশের বিশারদ তিনি।
‘বেদের সঙ্গে উড্ডয়ন বিদ্যার সম্পর্ক কীরকম?’ জিজ্ঞেস করলাম আমি।
তিনি আমার দিকে কিছুক্ষণ করুণার দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন। পরে বললেন-
‘সেটাই আমি বার করার চেষ্টা করছি।’
পান্ডুকেশ্বর-এর কাছে এসে পথ নেমে যেয়ে আবার তা উঠতে থাকে। আমি সারাক্ষণ সীমান্তরেখায় বদ্রিনাথ অঞ্চলের বনভূমি খুঁজে ফিরি। এদের সম্পর্কে বহু আগে ইরেজার-এর ‘হিমালয়ের পর্বতমালা’ লেখায় পড়েছি।
৯,০০০ ফুট উচ্চতা পর্যন্ত আখরোটগাছ জন্মায়, দেবদারু ও বিলকা ৯,৫০০ ফুট-একই উচ্চতায় কয়েক ধরনের ফার-ও জন্মায়। কিন্তু অল্পসল্প পাইন ছাড়া আর কিছু দেখতে পাইনা। দেবদারুর কোনো চিহ্ন নেই। হলো কী গাছগুলোর, অবাক হয়ে ভাবি। ডুগালবেটা থেকে মানডাল পর্যন্ত গাছপালা দেখে মুগ্ধ হয়েছি। এই জায়গাগুলো অবশ্য সংরক্ষিত। কিন্তু অলকানন্দার এত উপরে এসে মনে হচ্ছে এখানে গাছপালা তেমন জন্মায়না, নয়তো আগে জন্মালেও এখন তা ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে।
অবশেষে আমরা বদ্রিনাথের ঊষর উপত্যকায় এসে পৌঁছলাম, সারাক্ষণ বাতাসের ঝাঁটা চলছে উপত্যকাটির উপর দিয়ে। বদ্রিনাথ একটি উঠতি শহর, জীবন্ত, কেবল উচ্চশিখর তুষারাবৃত পাহাড়শ্রেণিদ্বারা পরিবৃত হওয়ায় শহরটিকে ক্ষুদ্র মনে হয়। যোশিমঠের মতই এখানেও হোটেল বা ধর্মশালার কোনো কমতি নেই। তা সত্ত্বেও কোনো হোটেল বা রেস্ট-হাউজ খালি নেই। শীর্ষ তীর্থসময় এটা, কাজেই তীর্থযাত্রী, ভ্রমণপিাপাসু, ভিখিরি, সবাই ভিড় জমিয়েছে নদীসংলগ্ন অঞ্চলটিতে।
শিবমন্দিরের জন্য কেদার যেমন হিমালয়ে সবচেয়ে পবিত্র বিবেচিত, তেমনি বদ্রিনাথ হলো বৈষ্ণবদের জন্য সর্বোচ্চ প্রার্থনাস্থল।
পুরাণ অনুযায়ী শংকরাচার্য তাঁর বিশ্বজয়-যাত্রার একপর্যায়ে যখন মানা উপত্যকা ভ্রমণ করেন তখন তিনি নারদ-কুণ্ডু এসে সেখানে সরোবরে পঞ্চাশটা বিভিন্ন মূর্তি দেখতে পান। মূর্তিগুলিকে উদ্ধার করেন তিনি। ওই সময় দৈবকণ্ঠ বলে ওঠে, ‘এগুলো কলিযুগের জন্য, কাজেই এদেরকে রক্ষা করো।’ শংকরাচার্য তদনুযায়ী সেখানে জন্মানো একটা প্রকা- বৃক্ষের নিচে মূর্তিগুলোকে স্থাপন করেন। বৃক্ষটি এতই বড়ো ছিলো যে তার ছায়া পড়তো বদ্রিনাথ থেকে আশি মাইলেরও বেশি দূরত্বে নন্দপ্রয়াগ পর্যন্ত। কাছেই আবার নর-নন্দপ্রয়াগ (বা অর্জুন এবং কৃষ্ণ)-এর আশ্রম, এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এগুলোকে উপলক্ষ্য করে মন্দির নির্র্মিত হলো। বিভিন্ন বিষ্ণুমূর্তিও প্রতিষ্ঠিত হলো। বিষ্ণু এখানেই সশরীরে তাঁর ভক্তদের সামনে হাজির হয়েছিলেন, চার-বাহু, মাথায় জটা, পরনে মুক্তা সহ মালার অলংকার। বলা হয় বিশ্বাসীর চেখে আজো তিনি ধরা দেন কুম্ভের দিনে নীলকণ্ঠপাহাড়ের চূড়ায়। সত্যি বলতে কী, এই জ্বালামুখের মতো উপত্যকাটিতে নীলকণ্ঠ চূড়াটিই আধিপত্যবিস্তার করে আছে। এখানে বেগুনি ফুলের কিছু থিসল, আর কিছু বিছুটি কোনো মতে টিকে আছে। মরুভূমিতে যেমন ক্যাকটাস, তেমনি এই পার্বত্য পরিবেশে কাঁটাগাছ জাতীয় উদ্ভিদই জন্মাতে ও টিকে থাকতে পারে।
নীলকণ্ঠ নামকরণ পরোক্ষভাবে ভগবান শিবকে ইঙ্গিত করেই। শিব একবার বিষ গলাধকরণ করেছিলেন, যা না করলে গোটা জগত ধ্বংস হয়ে যেত। ওই বিষ তাঁর গলায় আঁটকে ছিলো, ফলে বাইরে বিষের নীল বোঝা যেতো। নীলকণ্ঠ চূড়াটি রাজকীয় মহিমা নিয়ে অবস্থান করে, শ্রদ্ধার উদ্রেক করে দর্শনার্থীদের মধ্যে। উচ্চতায় ২১,৬৪০ ফুট। বদ্রিনাথ থেকে এর চূড়ার দূরত্ব মাত্র পাঁচ মাইল হওয়ায় এটির প্রতি ভক্তি যথার্থ। চূড়াটির তুষারাবৃত শীর্ষ থেকে তিনটি বিশাল শৈলশিরা নেমে এসেছে। তার দক্ষিণেরটি গিয়ে মিশেছে অলকানন্দ উপত্যকায়।
পৌঁছাতে পৌঁছাতে আমাদের সন্ধ্যা, তখন আমরা এর শৃঙ্গের দর্শন পেলাম না, কারণ তা তখন মেঘের আড়ালে অদৃশ্য। পুরো বদ্রিনাথই সেই সময়টাতে কুয়াশার চাদরে মোড়া। কিন্তু তা আমাদের মন্দিরে পৌঁছার অন্তরায় হতে পরেনি। চমৎকার সাজে নির্মিত প্রায় পঞ্চাশ ফুট উঁচু মন্দিরটির চূড়া স্বর্ণ-মণ্ডিত। এই পবিত্র স্থানটির ঠিক কেন্দ্রস্থলে রয়েছে কালো পাথরে খোদাই করা বিষ্ণু মূর্তি। দরজার ঠিক বিপরীতে, ধ্যানের ভঙ্গিতে। অখ- মানুষের স্রোত প্রবেশ করছে মন্দিরের ভিতর, পরে বের হয়ে আসছে দেবতার নৈকট্যলাভের ফলে পূতপবিত্র হয়ে।
মন্দির থেকে সিঁড়ি নেমে গেছে নিচে গর্জে বয়ে যাওয়া নদী আর একটু উপরে অবস্থিত উষ্ণ প্রস্রবণ পর্যন্ত। আরেকটি রাস্তা চলে গিয়েছে লম্বা কিন্তু গোছানো একটা বাজারের পাশ দিয়ে। এই বাজারে তীর্থযাত্রীরা নানান ধরনের স্মারক বস্তু কিনতে পারেন-কবচ, দেব-দেবীর রঙিন ছবি, ইত্যাদি। এখানে আমি সস্তায় আংটি কেনার সুযোগের সদ্ব্যবহার করি, কেউ নেই এখানে আমার এই ছেলেমানুষি দেখে হাসবার। বিচিত্ররকম আংটি রয়েছে কেনার জন্য কুণ্ডলি পাকানো সাপের আকৃতি (আমার পছন্দের), লোহা ও তামার তার মুচড়ে বানানো, আবার কোনোটিতে রয়েছে দেব-দেবী, ধর্মগুরু, সাধুপুরুষদের ছবি। কোনোটারই দাম দু-তিন টাকার বেশি নয়, ফলে পকেট ভরে কিনতে পারি আমি। এসব আংটি আমি পরি না, শুধু সংগ্রহে রাখি। আমার বন্ধুদের বিশ্বাস যে আগের জন্মে আমি পাতিকাক ছিলাম। চক্চকা উজ্জ্বল জিনিসের প্রতি আকর্ষণ আমার অদম্য।
ভারত কাকের রাজ্য, কাজেই বদ্রিনাথও তার ব্যতিক্রম নয়। মানুষের সঙ্গে কাকের উপস্থিতিও এখানে প্রচুর। হিন্দুরা তাদের ধর্মটাকে উপভোগ করে-ঝরনার শীতল পানি, কী উষ্ণ প্রস্রবণে স্নান, বা এক পাহাড় থেকে আরেক পাহাড়ের মন্দিরে ছুটে যাওয়া অতিপ্রাকৃতিক কিছু দর্শনের আশায় গভীর আগ্রহ ও উদ্দীপনা নিয়ে-এ সবই করে তারা।
এমনকী সংসারত্যাগি মানুষও এখানে এসে আনন্দ পায়। গুজরাট থেকে আসা কমবয়সি মহিলাটির কথাই ধরা যাক-সন্যাস নেয়া মেয়েটি মন্দিরের নিচে সিঁড়িতে এসে আমার সঙ্গে পরিচিত হলো। একটা চোখ ধাঁধানো হাসি দিয়ে সে একটা অনুশীলন খাতা এগিয়ে দিল আমার দিকে। সে মৌনব্রত গ্রহণ করেছে; তবে আমার ধারণা যে সে স্বভাবে ভীষণ আলাপি ও কৌতূহলী ধরনের হওয়ায় লিখনির মাধ্যমে অন্যদের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে চায়। আর এজন্যেই সে অনুশীলন খাতা হাতে ঘুরে বেড়ায়। আমার সঙ্গে তার তিনটি পৃষ্ঠা পূর্ণ হবার পর সে জানায় যে অমরনাথ যাওয়ার ইচ্ছা তার, কিন্তু আর্থিক সংকটে রয়েছে সে। আমার উদার ভ্রমণ-সঙ্গীর সহায়তায় তাকে কিছু দান করা সম্ভব হলো। এতে সে আবার তার উজ্জ্বল হাসি বিতরণ করে আমাদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে দ্রুত হারিয়ে গেল মানুষের ভিড়ে।
বদ্রিনাথে পাখির কাকলি আর গাছপালার অভাব অনুভব করলেও এখানে ওসবের অভাব পূরণে অন্য বিকল্প রয়েছে। পুণ্যনদীর পাশে অবস্থিত নানা বর্ণে চিত্রিত সুন্দর মন্দিরটিতে ভিড় করে আসা মানুষদের সঙ্গে শরিক হওয়ার একটা আনন্দ আছে। পরদিন প্রত্যুষে সেরা পুরষ্কার জুটে গেল আমার বরাতে।
জানালা খুলে বাইরে তাকিয়ে দেখি প্রভাতসূর্য নীলকণ্ঠর তুষারাবৃত চূড়া ছুঁয়েছে। প্রথমে তুষারের রং হয়েছে গোলাপি, পরে তা ক্রমশ কমলা থেকে কাঞ্চন। আকাশ-চূড়ায় ওই দৃশ্য দর্শনে মুগ্ধ বিস্ময়ে চোখ থেকে ঘুম টুটে গেলো আমার। এই মুহুর্তে স্বয়ং ভগবান বিষ্ণু পর্বত শীর্ষে দেখা দিলে আমি একটুও অবাক হতাম না। (চলবে)
ছবি: গুগল



কবি জীবনানন্দ দাশের প্রেম শোভনা
16 Oct 2025
310 বার পড়া হয়েছে

ছয়টি কবিতা
16 Oct 2025
340 বার পড়া হয়েছে

কবিতা বুঝিনি আমি...
26 Sept 2025
915 বার পড়া হয়েছে

বাংলা সাহিত্যের পঞ্চ কবিকে জানার সুযোগ ...
18 Sept 2025
2300 বার পড়া হয়েছে

আইয়ুব বাচ্চুর রুপালি গিটার
6 Feb 2025
5405 বার পড়া হয়েছে

পাঠ অনুভূতি : একদিন ঘুম ভাঙা শহরে
30 Jan 2025
5510 বার পড়া হয়েছে

কাজেকর্মে কমলকুমার
9 Jan 2025
4195 বার পড়া হয়েছে

আমরা করবো জয়
2 Jan 2025
2575 বার পড়া হয়েছে

ঘরহীন ঘরে হেলাল হাফিজ
14 Dec 2024
4080 বার পড়া হয়েছে

অ্যাপল পাই, কেক আর সিলভিয়া প্লাথ
12 Dec 2024
2500 বার পড়া হয়েছে

শতবর্ষে নেরুদার প্রেম ও নৈঃশব্দ
5 Dec 2024
2980 বার পড়া হয়েছে

রুশ লোকগল্প আর যত খাবার
28 Nov 2024
3590 বার পড়া হয়েছে

নৃশংসতার সাক্ষ্য দেয় গ্রাসের টিন ড্রাম
21 Nov 2024
2475 বার পড়া হয়েছে

মায়কোভস্কির শেষ চিঠি
14 Nov 2024
2540 বার পড়া হয়েছে

বিভূতিভূষণের বন্ধুরা
7 Nov 2024
3355 বার পড়া হয়েছে

পৃথিবী আর সূর্য‘র মাঝখানে এক কবি
7 Nov 2024
2480 বার পড়া হয়েছে

পাগল হাওয়ার অ্যানিয়াস নিন
31 Oct 2024
2480 বার পড়া হয়েছে

ফেরেননি জীবনানন্দ
24 Oct 2024
2330 বার পড়া হয়েছে

হারানো শহরে হেমিংওয়ে
10 Oct 2024
2530 বার পড়া হয়েছে

প্রকৃত সারস
19 Sept 2024
2845 বার পড়া হয়েছে

বেশি চুরি যাওয়া বই নাইনটিন এইটি ফোর
11 Jul 2024
3470 বার পড়া হয়েছে

মৃত্যুর শতবর্ষে দুঃস্বপ্ন
4 Jul 2024
3385 বার পড়া হয়েছে

অপেক্ষা...
27 Jun 2024
3490 বার পড়া হয়েছে

আবিদ আজাদের কবিতা
13 Jun 2024
5435 বার পড়া হয়েছে

গোয়েন্দার ১০০ বছর
6 Jun 2024
4165 বার পড়া হয়েছে

এলিয়ট দ্বিতীয় স্ত্রী‘র জন্য লিখেছিলেন যৌন কবিতা
6 Jun 2024
3685 বার পড়া হয়েছে

অ্যালান পো‘র ঘুমিয়ে পড়া কবিতা
3 May 2024
2830 বার পড়া হয়েছে

সময়ের তাকে একটি পুরনো বই
25 Apr 2024
5755 বার পড়া হয়েছে

দুটি কবিতা
7 Apr 2024
4410 বার পড়া হয়েছে

আমার মনের ভিতরে একটা ট্রেন আছে
7 Apr 2024
3315 বার পড়া হয়েছে

শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায় ছোটগল্প সম্মান
29 Mar 2024
4140 বার পড়া হয়েছে

আলম হায়দারের ২টি কবিতা
21 Mar 2024
2970 বার পড়া হয়েছে

বিদেশী কবিতা
21 Mar 2024
2945 বার পড়া হয়েছে

একশ দুই বছরে জয়েসের ইউলিসিস
14 Mar 2024
2735 বার পড়া হয়েছে

পার্সোনাল সার্ভিস পর্ব. ১২
22 Feb 2024
4105 বার পড়া হয়েছে

পার্সোনাল সার্ভিস পর্ব. ১১
8 Feb 2024
4065 বার পড়া হয়েছে

অন্য হেমন্তের কাছে
1 Feb 2024
2555 বার পড়া হয়েছে

পার্সোনাল সার্ভিস পর্ব. ১০
1 Feb 2024
3375 বার পড়া হয়েছে

পার্সোনাল সার্ভিস পর্ব. ৯
25 Jan 2024
3950 বার পড়া হয়েছে

পার্সোনাল সার্ভিস পর্ব. ৮
18 Jan 2024
3595 বার পড়া হয়েছে

আমার মনের ভিতরে একটা ট্রেন আছে
18 Jan 2024
2495 বার পড়া হয়েছে

পথের পাঁচালী রইলো…
11 Jan 2024
2490 বার পড়া হয়েছে

পার্সোনাল সার্ভিস পর্ব. ৭
11 Jan 2024
3180 বার পড়া হয়েছে

কবিতাগুচ্ছ
4 Jan 2024
4000 বার পড়া হয়েছে

পার্সোনাল সার্ভিস পর্ব. ৬
4 Jan 2024
4890 বার পড়া হয়েছে

পার্সোনাল সার্ভিস পর্ব. ৫
28 Dec 2023
4285 বার পড়া হয়েছে

ভ্যান গঘের বইপত্র
21 Dec 2023
3205 বার পড়া হয়েছে

পার্সোনাল সার্ভিস পর্ব. ৪
21 Dec 2023
4705 বার পড়া হয়েছে

পার্সোনাল সার্ভিস পর্ব. ৩
13 Dec 2023
4860 বার পড়া হয়েছে

গাজা থেকে লেখা কবিতা
7 Dec 2023
4615 বার পড়া হয়েছে

পার্সোনাল সার্ভিস পর্ব. ২
7 Dec 2023
4775 বার পড়া হয়েছে

আজও নাইনটিন এইটি ফোর
30 Nov 2023
2960 বার পড়া হয়েছে

পার্সোনাল সার্ভিস পর্ব. ১
30 Nov 2023
5155 বার পড়া হয়েছে

র্যাবিট ক্যাচার ও অপ্রকাশিত চিঠি
23 Nov 2023
3040 বার পড়া হয়েছে

তালনবমী
23 Nov 2023
3160 বার পড়া হয়েছে

তানিয়া হাসানের তিন কবিতা
17 Nov 2023
3555 বার পড়া হয়েছে

হেমন্তে হ্যামলেট...
26 Oct 2023
4270 বার পড়া হয়েছে

নীর-বিন্দু
19 Oct 2023
4540 বার পড়া হয়েছে

পুজোর গন্ধ…
5 Oct 2023
6375 বার পড়া হয়েছে

পঞ্চাশ বছর পরে (শেষ পর্ব)
5 Oct 2023
8685 বার পড়া হয়েছে

সিমনের সমকামী জীবনের গল্প
28 Sept 2023
3645 বার পড়া হয়েছে

পঞ্চাশ বছর পরে (পর্ব ৪)
28 Sept 2023
16210 বার পড়া হয়েছে

১২ই সেপ্টেম্বর…
14 Sept 2023
4885 বার পড়া হয়েছে

পঞ্চাশ বছর পরে (পর্ব ৩)
14 Sept 2023
8550 বার পড়া হয়েছে

পঞ্চাশ বছর পরে (পর্ব ২)
7 Sept 2023
10705 বার পড়া হয়েছে

শালামভের নরক
7 Sept 2023
6235 বার পড়া হয়েছে

পঞ্চাশ বছর পরে (পর্ব ১)
31 Aug 2023
10005 বার পড়া হয়েছে

মায়াকোভস্কির প্রতি ট্রটস্কি
23 Aug 2023
3935 বার পড়া হয়েছে

একটি উজ্জ্বল মাছ
15 Jun 2023
4680 বার পড়া হয়েছে

মার্কেজের আনটিল অগাস্ট
1 Jun 2023
3360 বার পড়া হয়েছে

নন্দিনীর সংসার..
13 Apr 2023
3385 বার পড়া হয়েছে

গুডনাইট ভিভিয়েন, গুডনাইট
27 Oct 2022
2680 বার পড়া হয়েছে

বই পোড়ার গন্ধ
2 Sept 2022
2670 বার পড়া হয়েছে

নবারুণ ভট্টাচার্যের কবিতা
25 Aug 2022
8485 বার পড়া হয়েছে

গথিক গল্পের গা ছম ছম
16 Jun 2022
2380 বার পড়া হয়েছে

আপনাকে দশদিনের জন্য স্বামী হিসেবে পেলে আমি ধন্য
31 Mar 2022
2575 বার পড়া হয়েছে

ভ্যান গঘের বোন...
1 Apr 2021
2455 বার পড়া হয়েছে

আমার চেনা দেরা
2 Jun 2019
2240 বার পড়া হয়েছে

সাদা মেঘ, সবুজ পাহাড়
23 May 2019
2885 বার পড়া হয়েছে

বিদায় নিলেন অদ্রিশ বর্ধন
21 May 2019
2440 বার পড়া হয়েছে

প্রাচীন উদ্ভিদ সংগ্রাহকগণ
16 May 2019
2620 বার পড়া হয়েছে

পাহাড়ে পাহাড়ে পাখির কাকলি
9 May 2019
2665 বার পড়া হয়েছে

গাড়োয়ালের অসাধারণ বৃক্ষরাজি
2 May 2019
2285 বার পড়া হয়েছে

নেমে আসে গঙ্গা
25 Apr 2019
2475 বার পড়া হয়েছে

লুৎফুল হোসেনের তিনটি কবিতা
25 Apr 2019
3000 বার পড়া হয়েছে

যেখানে নদীরা এসে মেশে
18 Apr 2019
2230 বার পড়া হয়েছে

বদ্রিনাথের পথে
11 Apr 2019
2465 বার পড়া হয়েছে

তুংনাথের জাদু
4 Apr 2019
2495 বার পড়া হয়েছে

মন্দাকিনীর পাড় ধরে
28 Mar 2019
2670 বার পড়া হয়েছে

লান্ডুর বাজার
21 Mar 2019
2525 বার পড়া হয়েছে

পুরনো মুসৌরির গল্প
14 Mar 2019
2940 বার পড়া হয়েছে

গাড়োয়ালের এক গ্রাম
7 Mar 2019
2405 বার পড়া হয়েছে

গাছের সঙ্গে বেড়ে ওঠা
1 Mar 2019
3055 বার পড়া হয়েছে

গল্পগুলো বাধ্য করে...
21 Feb 2019
2395 বার পড়া হয়েছে

দুনের রানি
21 Feb 2019
2570 বার পড়া হয়েছে

হিমালয় ও গঙ্গা
7 Feb 2019
2865 বার পড়া হয়েছে

অমিত রঞ্জন বিশ্বাসের ৩ টি কবিতা
10 Jan 2019
2675 বার পড়া হয়েছে

প্রয়াত মুনিরা চৌধুরীর ৫টি কবিতা
22 Nov 2018
2295 বার পড়া হয়েছে

রায়হান শরীফের চারটি কবিতা
9 Nov 2018
2415 বার পড়া হয়েছে

সহজ মানুষের গান…
2 Aug 2018
2665 বার পড়া হয়েছে

২২ শে শ্রাবণের দিকে…
2 Aug 2018
2155 বার পড়া হয়েছে

পাঁচটি কবিতা
10 May 2018
3410 বার পড়া হয়েছে

কবিতা পড়ার দায়!
1 Feb 2018
3430 বার পড়া হয়েছে

ওয়াদুদ রহমানের ৫টি কবিতা
18 Jan 2018
3540 বার পড়া হয়েছে
স্বত্ব © ২০১৬ - ২০২৩ প্রাণের বাংলা।
সম্পাদক ও প্রকাশক: আবিদা নাসরীন কলি।
Email: Article: [email protected], Avertising: [email protected]
Phone: +8801818189677, +8801717256199