কর্মক্ষেত্রে এবং গৃহে অন্য পুরুষের হাতে নারীর যৌন হেনস্থার ঘটনা নিয়ে প্রতিবাদের ঢেউ উঠেছে বাংলাদেশে। বাইরের পৃথিবীর নারীদের প্রতিবাদের সহমর্মী বিষ্ফোরণ এখানেও ঘটেছে। সমাজের বেশ কয়েকজন নারী প্রকাশ্যে এগিয়ে এসে তাদের জীবনে জমে থাকা যন্ত্রণাময় অন্ধকারকে আলোতে বের করে এনেছেন। কিন্তু বিবাহের সিলমোহর নিয়ে বেডরুমে যে যৌন নিপীড়ন চলে প্রতিদিন সে ব্যাপারে প্রতিবাদের ঢেউ উঠবে কবে? স্বামী-স্ত্রীর যে শরীরী সম্পর্কের মাঝে কোনো প্রেম নেই, আছে কেবল পুরুষের কামনা চরিতার্থ করতে নারীর বাধ্যতা সে সম্পর্ক তো সাদা চোখে যৌন নির্যাতনই। প্রতিবেশী দেশ নেপাল ও ভূটানে কিন্তু এটি অপরাধ হিসেবে স্বীকৃত। ব্রিটেন, ৫০টি আমেরিকান রাজ্য ও প্রথম বিশ্বের দেশগুলি ছাড়াও আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার তৃতীয়/চতুর্থ বিশ্বের দেশগুলিতেও বৈবাহিক ধর্ষণ ক্রিমিনাল অফেন্স। যে দেশগুলিতে ম্যারিটাল রেপ-কে অপরাধ বলে গণ্য করা হয়, সেখানে কিন্তু এই আইনি সংশোধন এসেছে সে দেশের নারীদের গণপ্রতিবাদের মধ্যে দিয়েই।
প্রাণের বাংলার সম্পাদনা পরিষদ মনে করে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হওয়া উচিত। সে লক্ষ্যেই সমাজের কয়েকজন কর্মজীবী নারীর সঙ্গে আলোচনার সূত্রপাত। এই সংখ্যা প্রাণের বাংলার প্রচ্ছদ আয়োজনে রইলো ‘দাম্পত্য সম্পর্কে #Me Too
স্বামীর হাতে ধর্ষণের ইস্যুটি এখনও সমাজে ততটা গুরুত্ব পাচ্ছে না
(নিউজ এডিটর, বাংলাভিশন)
আমার বাসায় ঠিকে কাজ করতো রাশিদা। বয়স বড়জোর ৩৪ বা ৩৫। সকালে আমি অফিস যাওয়ার আগে, সে এসে ঘর মোছা আর কাপড় ধুয়ে যেতো। কোনদিন কাজে আসতে না পরলে ফোন করে জানিয়ে দিতো। একদিন অফিসে যাবো, দেরী হয়ে যাচ্ছে কিন্তু রাশিদা আসছে না। আমি তার মোবাইলে ফোন করলাম, নাহ্ ফোন বন্ধ। অগত্যা আর দেরী না করে অফিসে চলে এলাম। পরদিনও সে এলো না। ফোনও করলো না। তৃতীয় দিনেও যখন আসলো না তখন আমি ঠিক করলাম ওর বাসায় যাবো। অফিস শেষে তারা বাসার দিকে রওনা হলাম। আমাদের বাসা থেকে কিছুটা দূরে এক বস্তিতে থাকে রাশিদা ও তার পরিবার। তার বাসায় গিয়ে দেখি সে বেশ অসুস্থ। হাঁটতেও পারছে না। জ্বরও আছে গায়ে। ভাবলাম এমনি হয়তো সর্দি জ্বর। কিন্তু রাশিদা যা বললো তা শুনে আমি স্তব্ধ হয়ে ছিলাম অনেকক্ষন। ও বললো, আমার বাসাসহ আরো কয়েকটি বাসায় সেদিন কাজ শেষে বাসায় ফিরে দেখে তার স্বামী মোবাইলে একটা ভিডিও দেখছে। ওই ভিডিও দেখা শেষে রাশিদার স্বামী তার সঙ্গে শারীরিক মিলনে যেতে চায়। রাশিদা রাজি না হওয়ায় জোর করে যৌন মিলনে যেতে বাধ্য করে তার স্বামী। সারারাত ওই অত্যাচার করে। মোবাইলে পর্ণো দেখে আর ভিডিওর মতো তাকে সঙ্গম করতে বাধ্য করে। এক পর্যায়ে তার ব্লিডিং শুরু হয়, তাতেও তার স্বামী থামেনি। সকালে সে মরার মতো পড়ে ছিলো। স্বামী তাকে ওভাবে রেখে ঘর থেকে বের হয়ে যায়। ও জানালো গত তিনদিন তার স্বামী বাসায় ফেরেনি, সে উঠে রান্না করতে পারেনি তাই বাচ্চারাও খায়নি। সে আরো জানায়, সেক্স করার আগে তার স্বামী কোন একটা ওষুধ খায়।
অনেকক্ষন স্তব্ধ হয়ে বসে ছিলাম। এরপর রাশিদাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলাম। ডাক্তার বললেন, রাশিদার যৌনাঙ্গ ভয়াবহভাবে ক্ষতবিক্ষত। ডাক্তারের কাছে থেকে ফেরার পথে বললাম চলো থানায় যাই, তোমার স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করো। ও অবাক হয়ে বললো ‘ স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা কেন করুম!।’ বললাম, ও তো তোমাকে ধর্ষন করেছে। রাশিদা আমাকে বললো, ‘এইটা তো তার অধিকার, হে তো আমার লগেই করবো, আমি না দিলে অন্য বেটির কাছে যাইবো।’
এই হলো বাংলাদেশের বিবাহিত অনেক নারীর অবস্থা। পড়ালেখা জানা মধ্যবিত্ত উচ্চবিত্ত শ্রেনীর নারীরা এ বিষয়ে কিছুটা সচেতন হলেও নিম্নবিত্ত নারীর ধ্যান ধারনা রাশিদার মতোই। বৈবাহিক সম্পর্কের মধ্যে ধর্ষণকে জাতিসংঘ ভয়াবহ ধরনের পারিবারিক সহিংসতা বলে মনে করে। কিন্তু বাংলাদেশের সমাজে এ নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গি রাশিদার চিন্তা ধারার চেয়ে খুব ভিন্ন নয়।
বিষয়টি নিয়ে কাজ করেন এমন নারী অধিকার কর্মীরা বলেছেন, স্বামী দ্বারাও যে ধর্ষণ সম্ভব, সেটি সামাজিকভাবেও একটি অদ্ভুত ধারনা বলে বিবেচিত হয়। তাছাড়া, বাংলাদেশের কোন আইনেই বৈবাহিক সম্পর্কের মধ্যে ধর্ষণ বিষয়টি অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত নয়। নিজেদের অধিকার নিয়ে দিন দিন সরব হচ্ছেন বাংলাদেশের নারীরা। কিন্তু স্বামীর হাতে ধর্ষণের ইস্যুটি এখনও সমাজে ততটা গুরুত্ব পাচ্ছে না।
স্বামীর কাছে দিনের পর দিন যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, এমন এক নারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিবিসির কাছে তার অভিজ্ঞতার কথা বলতে রাজী হন। তিনি বলেন, ‘যখন তার ইচ্ছে হতো তখনই আমি বিছানায় যেতে বাধ্য হতাম। ঘরে আমার মা থাকতো, ছোট একটা ভাই থাকতো। না বললে সে প্রচণ্ড মারধোর করতো। সে আমার অসুস্থতাও মানত না। আমার যখন পিরিয়ড হতো তখন আমি একটু হাফ ছেড়ে বাঁচতাম। ভাবতাম হয়তো কয়েকটা দিন আমি টর্চারের হাত থেকে বেঁচে যাবো।’ দৈহিক ও মানসিকভাবে ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন সেই নারী। তিনি বলেন, স্বামীর সঙ্গে দেড় বছরের মাথায় বিচ্ছেদের এটিই ছিল মূল কারণ। উচ্চশিক্ষিত এবং প্রগতিশীল হিসেবে পরিচিত এই নারী বৈবাহিক সম্পর্কের মধ্যে ইচ্ছের বিরুদ্ধে যৌন সম্পর্ককে ধর্ষণ বলে মনে করেন।
আমি কয়েকজন নারীর সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে তারা এ নিয়ে কথা বলতে আগ্রহী নয় বলে জানান। আর কয়েকজন বলেছেন স্বামীতো এরকম করতেই পারে। বৈবাহিক সম্পর্ক থাকাকালীন স্বামীর হাতে ধর্ষণ- বিষয়টি বেশিরভাগের মানুষের কাছে পরিষ্কার নয়। অধিকার বিষয়ক সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নীনা গোস্বামী বলেন, তাদের কাছে এ বিষয় নিয়ে কোনো নারী অভিযোগ করেন না।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পর দক্ষিন এশিয়ার নারীরাও #MeToo তে তার জীবনের যৌন হেনেস্থার কথা বলতে শুরু করেছেন। ভারতের পর বাংলাদেশের মেয়েরাও #MeToo তে মুখ খুলছে। ভাবছিলাম স্বামী কর্তৃক ধর্ষনের ঘটনা নিয়ে কোন নারী কি প্রকাশ্যে আনতে পারে? মনে হলো পারে। কিন্তু বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে স্বামীর সঙ্গে সংসার করা অবস্থায় কোন নারীই স্বামীর এই যৌন নির্যাতনকে #MeToo বলে প্রকাশ করবে বলে মনে হয় না। বিবিসির কাছে যে নারী এ বিষয়ে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন তিনি উচ্চ শিক্ষিত প্রগতিশীল হওয়ার পরও তার পরিচয় প্রকাশ করতে চাননি। বিবাহ বিচ্ছেদ হওয়ার পরও স্বামীর পরিচয় দেননি। অন্য নারীরাও এর ব্যতিক্রম হতে পারবেন বলে মনে হয় না। তবে কেউ এ বিষয়ে প্রতিবাদ করে এগিয়ে এলে আমি অবশ্যই তাকে সাদুবাদ জানাবো। সাহসী বলবো। খারাপ প্রথা ভাঙ্গার পথে নারীরা আরেক ধাপ এগিয়ে যাবে।
শেষে এটাই বলবো, বাংলাদেশের কোন আইনেই বৈবাহিক সম্পর্কের মধ্যে ধর্ষণ বিষয়টি অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত নয়। কিন্তু আইন প্রণেতাদের এ বিষয়ে দৃষ্টি দেয়ার সময় এসেছে। নারী নির্যাতন আইনের ধারায় এ বিষয়টিকেও সংযুক্ত করা এখন সময়ের দাবী।
স্বামীরা এখনও স্ত্রীকে ব্যক্তিগত সম্পত্তি মনে করে
(সিনিয়র রিপোর্টার, বৈশাখী টেলিভিশন)
বিশ্বের সকল দেশেই ধর্ষণকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়। আমাদের দেশের দন্ডবিধির ৩৭৫ ধারায় ধর্ষণের সংজ্ঞা ও ৩৭৬ ধারায় এর শাস্তি উল্লেখ করা হয়েছে। তবে আইনে বৈবাহিক ধর্ষণকে অপরাধ হিসাবে আলাদাভাবে গণ্য করা হয়নি। একুশ শতকে দাঁড়িয়েও বৈবাহিক ধর্ষণকে অধিকাংশ মানুষ অপরাধ হিসেবে মানতে নারাজ। বিবাহিত নারীরা তাদের স্বামীর কাছ থেকে যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন- জীবনের কোন না কোন সময়। অবশ্য এ বিষয়ে কেউ এখনও মুখ খোলেননি বা আইনী সহায়তার কথা নিয়েছেন তেমনটাও শোনা যায়নি। পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় এদেশে পুরুষেরা নারীদের ওপর জীবনের সর্বস্তরে ও সবখানেই আধিপত্য বিস্তার করে আসছে।
আমাদের সমাজে এখনও স্বামীরা স্ত্রীকে তার ব্যক্তিগত সম্পত্তি মনে করে। স্ত্রীর ওপর তার স্বেচ্ছাচারী আচরণকে স্বামীরা নিজেদেও অধিকার বলেই মনে করে। অধিকাংশ নারী এখনও আর্থিকভাবে সামাজিকভাবে স্বামীর ওপর নির্ভরশীল। আর এ সুযোগটাই নিয়ে থাকে স্বামীরা। স্ত্রীদেরও ধারনা, স্বামী তো জোর করতেই পারে। বিশেষ করে যৌন সম্পর্কের ক্ষেত্রে জোর জবরদস্তি যে স্বামীর ক্ষেত্রেও ধর্ষণের সমান অপরাধ, সেটা বেশীর ভাগ নারীই বোঝেন না, জানেনও না। যারাও বা বোঝেন তারাও মুখ বুজে সয়ে যান। সংসার রক্ষা ও সামাজিকতার কারণেই দাম্পত্য জীবনের এসব ভয়াবহ অন্ধকার দিক আড়ালেই রয়ে যায়।
এসব পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে হলে নারীকে সচেতন হতে হবে আগে। স্বামী প্রভু নয়, জীবন চলার পথে বন্ধু এবং সম-অংশদীদার, এই বিষয়টিকে ধারণ করতে শিখতে হবে। ইতিহাস বলছে, ১৯২২ সালে প্রথম সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নে বৈবাহিক ধর্ষণকে অপরাধ বলে গন্য করা হয়েছিলো। সত্তরের দশকে একে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের আওতায় আনার উদ্যোগ নেয় যুক্তরাষ্ট্র। নব্বইয়ের দশকে সে দেশের ৫০টি স্টেটে বৈবাহিক ধর্ষণ আইনত দণ্ডনী
য় অপরাধ বলে গন্য হয়। এরপর একে একে বিশ্বের প্রায় এক’শ দেশে বৈবাহিক ধর্ষণকে নিষিদ্ধ করা হয়। ২০০৯ সালে জাতিসংঘের মহাসচিবের রিপোর্ট অনুযায়ী বিশ্বের ১০৪টি দেশে বৈবাহিক ধর্ষণ শাস্তিযোগ্য অপরাধ। অন্তত ৭৪টি দেশে সাধারণ ধর্ষণের আইনেই বৈবাহিক ধর্ষণের বিচার হয়। বাকি দেশগুলোর বিচার ব্যবস্থায় বৈবাহিক ধর্ষণের শাস্তি হিসাবে সুনির্দিষ্ট রয়েছে । ৫৩টি দেশে এখনও এটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ নয়। এরমধ্যে রয়েছে- ভারত, চীন, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, সৌদি আরবের মতো দেশ। অথচ প্রতিবেশি দেশ নেপাল ও ভুটানে বৈবাহিক ধর্ষণ শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
১৮৬০ সালের ভারতীয় দন্ডবিধি অনুযায়ী, কোন পুরুষ তার স্ত্রীর সঙ্গে জোরপূর্বক শারিরীক সম্পর্ক স্থাপন করলে তা ধর্ষণ নয়। বৈবাহিক সম্পর্কে স্ত্রী এর অসম্মতিতে স্বামী যৌন সম্পর্ক করলে তা অপরাধ কি’ না সে সম্পর্কে পেনাল কোডেও নির্দিষ্ট করে কোন বিধান নেই। বাংলাদেশের কোন সরকারের নীতি-নির্ধারক, আইন-প্রণেতারাও বিষয়টি কখনই গুরুত্ব দিয়ে ভেবেছেন বলে মনে হয় না। অবশ্য আইনজীবী এলিনা খান বলেছেন, ‘বিদ্যমান আইনেই বৈবাহিক ধর্ষণের বিচার করা সম্ভব। কেননা আইনে বলা হয়েছে জোরপূর্বক অথবা ইচ্ছার বিরুদ্ধে কারো সঙ্গে শারিরীক সম্পর্ক স্থাপনই ধর্ষণ- অভিযুক্ত যে-ই হোক। তবে গত ৩০ বছরের আইন পেশায় এ ধরনের মামলা পাইনি কখনো। তার মানে এই নয়, নারীরা বৈবাহিক ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন না। এটা যে অপরাধ অধিকাংশ নারী সেটাই জানেন না।’ আইনজীবী নীনা গোস্বামী বলেছেন, ‘তার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রে সরাসরি বৈবাহিক ধর্ষণের কোনও অভিযোগ কখনো আসেনি। পারিবারিক সহিংসতার অংশ হিসেবে নির্যাতনের শিকার নারীরা অনেকেই স্বামীর মাধ্যমে ধর্ষণের শিকার বলে জানান।
এখন আর একটি বিষয় সামনে এসেছে-#MeToo আমাদের সমাজে এখনও স্বামীরা স্ত্রীকে তার ব্যক্তিগত সম্পত্তি মনে করে আন্দোলন। এই আন্দোলনে অংশ নিয়ে কি বৈবাহিক ধর্ষণের শিকার নারীরা তাদের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরবেন? এমন আলোচনাও শোনা যায় চারপাশে। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি #MeToo একটি ভিন্ন ধরনের আন্দোলন। পুরুষদের যৌন বিকৃতি এবং নিপীড়ণের অজানা অধ্যায় প্রকাশের ও মুখোশ খুলে দেয়ার আন্দোলন। একইসঙ্গে এর বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টির সামাজিক আন্দোলন। আর ধর্ষণ সবক্ষেত্রেই গুরুতর অপরাধ- যদি সেটা বৈবাহিক সম্পর্কে স্বামী-স্ত্রীর ক্ষেত্রেও ঘটে।
এখন আমাদের দেশে সোচ্চার হওয়া দরকার বৈবাহিক ধর্ষণকে দন্ডবিধিতে গুরুতর অপরাধ হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করা এবং কঠোর শাস্তির বিধান নিশ্চিত করা। অবশ্যই এ ধরনের একটি স্পর্শকাতর অপরাধের বিচারের বিধান প্রণয়নের ক্ষেত্রে সংশিষ্ট সবার আরও বিস্তারিত পরিসরে আলাপ-আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে।
কালো রাত...
(সাংবাদিক, একুশে টেলিভিশন)
নিমা। চটপটে স্মার্ট। সব কাজেই তার দারুণ উৎসাহ। কাজ করে একটি বেসরকারী সংস্থায়। উচ্ছল মেয়েটি বিয়ের পর একদম পালটে গেল। চুপচাপ। সারাক্ষণ কি যেন ভাবে। কোনো কথায় হাসেনা। দিনে দিনে চোখের নীচে পরে কালি।
সহকর্মীরা ওর বর শশুরবাড়ীর গল্প শুনতে চায়। নিমা ম্লান হেসে এড়িয়ে যায়। চোখ এড়ায় না সহকর্মী তাহমিনার। খুব ভালো বন্ধু ওরা। একদিন জিজ্ঞেস করতেই নিমা কেঁদে ফেলে। বলে, ও ডিভোর্স দিতে চায় ওর বর মিনারকে। কাঁদতে কাঁদতে বলে- মিনার ওকে সম্মান করে না। প্রতিদিন ওর ওপর পাশবিক নির্যাতন চালায়। ও বিষয়টা মেনে নিতে পারে না।
মিনারকে দেখলে ভয় লাগে। বাসায় গেলে এখন আতংক লাগে। খালি পালিয়ে পালিয়ে বেড়ায়। কাউকে বলতে পারছে না বিষয়টা। দিনে দিনে মানসিক রোগী হয়ে যাচ্ছে নিমা।
তাহমিনা বিষয়টি নিয়ে কথা বলে নিমার বাবা মার সঙ্গে। প্রথমে তারা রাজী না হলেও পরে মেয়ের মানসিক অবস্থা দেখে নিজেদের কাছে নিয়ে যান। কিছুদিন পর নিমা ডির্ভোস দেয় মিনারকে। একটা জঘন্য সর্ম্পক থেকে রক্ষা পাওয়ায় মুক্তির নিঃশ্বাষ ফেলে। তবুও মাঝে মাঝেই দিনগুলির কথা মনে হলে শিউরে ওঠে নিমা।
ডাক্তারের স্ত্রী। মারিয়া (ছদ্মনাম)। তিনি জানান, তার মনে হতো তিনি প্রতিদিন ধর্ষিত হচ্ছেন। লজ্জায় কাউকে বলতে পারেননি। বিয়ের ৭ মাস পর অসম্মান সহ্য করতে না পেরে একদিন বাসা থেকে বেরিয়ে যান। আর ফিরে যাননি সংসারে। বলেন, বাইরের কোনো রেপের ঘটনা ঘটলে হয়তো প্রকাশ পায়। কিন্তু অনেক সংসারে নারীদের সঙ্গে নির্মম ঘটনা ঘটলে তা জানা যায়না। আড়ালেই থাকে সে সব। অনেক নারী তা প্রকাশ করতে পারেন না লজ্জা আর সমাজের ভয়ে।
তবে রেহানার গল্পটা একটু আলাদা। বিয়ের ১৫ বছর হয়ে গেল এখনো তিনি প্রতিদিন যেন মরে বেঁচে ওঠেন। লজ্জায় কাউকে বলতে পারেননি নিজের কষ্টের কথা। স্বামীর পাশবিক নির্যাতনের কথা কাউকে বলতে হয়না। স্বামীরা এমন করেই। মেয়েদের সব অত্যাচার সহ্য করে যেতে হয়- বিয়ের পর বলেছিলেন, তার ফুপু। ভালো মেয়ে হয়ে সব অত্যাচার সহ্য করে দিন চলে যায় তার। তার পাশে দাঁড়ানোর কেউ নেই। এ বিষয়টা যে কাউকে বলবেন তাই ভাবা হয়নি তার। মাঝে মাঝে আত্মহত্যার কথা ভেবেছেন। কিন্তু ২ সন্তানের কথা মনে করে তা আর করা হয়নি। সুপ্রিয় পাঠক, উচ্চবিত্ত নিম্নবিত্ত কিংবা মধ্যবিত্ত সব সংসারেই বেশীরভাগ নারীকে হতে হয় সহিংসতার শিকার। সেসব সহিংসতার ধরন হয় নানা মাত্রায়। এসব নির্যাতনের কাহিনী অজানাই থাকে বেশীর ভাগ সময়। কেউ এসব কথা বলেন কেউবা মুখ বুজে সয়ে যান সারাজীবন। ছোটবেলা থেকেই নারীদের শেখানো হয় ভালো মেয়েরা অভিযোগ করেনা। সমাজের ভালো মেয়ে হতে যেয়ে নারীরা মুখ বন্ধ করে সয়ে যায় সব নির্যাতন। মেনে নেয় সব অসম্মান। যখনই এ অসম্মানের বিরুদ্ধে কোনো নারী মুখ খোলে সঙ্গে সঙ্গে তাকে দেয়া হয় খারাপ নারীর তকমা।
#MeToo আন্দোলনে আজ নারীরা মুখ খুলছে। সব অসম্মান আর অপমানের বিরুদ্ধে অনেকেই কথা বলছেন। বলছেন, নীপিড়ক আর নীপিড়নের বিরুদ্ধে। কিন্তু ঘরে ঘরে যে সব নারীরা প্রতিদিন ধর্ষিত হচ্ছেন তারা কি পারছেন প্রতিবাদ করতে? না, পারছেন না। কারণ স্বামীর এহেন কর্মকান্ডের কথা সমাজ শুনতে চায়না। সমাজ ধরেই নেয়, স্বামীরা অত্যাচার করতেই পারে। ফলে নারীরাও নিজেদের দুবর্ল মনে করে দিনের পর দিন নির্যাতন সয়ে যায়।
এখন মুখ খোলার সময়। যে কোনো নির্যাতনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া দরকার।
ডিবির অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার মাহমুদা আফরোজ লাকী জানান- এ ধরনের কেস নিয়ে নারীরা সহজে তাদের কাছে আসেনা। তবে স্বামী স্ত্রীকে ব্ল্যাকমেইল করছে এমন কেইস তারা পান। তিনি বলেন, এমনও অভিযোগ আসে- অনেক স্বামী তাদের স্ত্রীদের ছবি ভিডিও করে পরে টাকা দাবী করেন। অনেকে আবারা এসব ছবি ফেসবুকে দিবেন বলে হুমকী দিয়ে পরকীয়া চালিয়ে যান। সম্মানের ভয়ে স্ত্রীরা তখন চুপ করে থাকেন। কেউ কেউ যখন আর সইতে পারেন না তখন তারা মামলা করেন। তিনি বলেন, স্বামীর যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীরা কথা বলতে চান না। তবে তারা চাইলে পারিবারিক আদালতে মামলা করতে পারেন। ভুটান ও নেপালে এ নিয়ে আইন থাকলেও বাংলাদেশ ভারত, পাকিস্তানে তেমন কোনো আইন নেই।
অনেক সময় পেরিয়ে গেছে। এখন চুপ না থেকে সময় এসেছে প্রতিবাদের। যতদিন নারীরা তাদের বিরুদ্ধে অন্যায় অবিচারের প্রতিবাদ না করবে, একজন আরেক জনের পাশে না দাঁড়াবে ততদিন পুরুষ অত্যাচার করেই যাবে। সমাজের লোক লজ্জার ভয় সরিয়ে এখন এগিয়ে আসতে হবে নারীকেই। কালো রাত সরিয়ে ভোরের আলো আনতে হবে তাকেই।
বন্ধ কপাট ও জমাট অন্ধকার
(উন্নয়ন র্কমী)
এটা সূর্যের মত সত্য যে নারীর প্রতি হওয়া যত রকম নিযার্তন আছে তার সূচনা এবং ধারাবাহিক চর্চা গৃহেই।
এই যে পৃথিবী জুড়ে #MeToo আন্দোলনের মাধ্যমে নারীদের মুক্তির বাতাবরন খুলে গেছে, পৃথিবীর এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তপর্যন্ত আজ পৌঁছে গেছে নারীর কন্ঠস্বর- কম্পিত হচ্ছে পুরষতন্ত্রের ভিত!তবুও কোথাও রয়ে গেছে একটা চাপা দীর্ঘশ্বাস! হাজার হাজার নারী আকুল হয়ে খুঁজে ফিরছে কোথাও একটা অন্য জানালা, অন্য উঠান। যেখানে তারাও বলবে,বলতে পারবে তাদের প্রতি গৃহে, সমাজ, ধর্ম ও আইন কতৃক নির্ধারিত শয্যায় স্বামী দ্বারা যৌন নিযার্তনের কাহিনী, যেমন যৌনতার জন্য বলপ্রয়োগ, পায়ুপথে যৌনমিলন ও মুখেযৌন মিলনে বাধ্য করা এবং যৌনরোগের সংক্রমন ঘটানো এবং আরো সভ্যতা বহিঃভূত বহুবিধ যৌননির্যাতন। যেখানে নারীর মতামতের কোন তোয়াক্কাই করা হয় না। বলা বাহুল্য, নারীদের বড় একটি অংশ প্রতিনিয়তই আক্ষরিক অর্থে স্বামী দ্বারা ধর্ষণের শিকার হন।
খুবই গতানুগতিক ধারণা, স্বামী, বিয়ে এবং যৌনতার মধ্যে ইচ্ছে অনিচ্ছের দেয়াল কোথায়,সত্যিই তো দেয়াল কোথায়? না দেয়াল নেই। আছে মানুষ হিসেবে অধিকারের প্রশ্ন, মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রশ্ন, সীমার মধ্যে এবং সীমানা অতিক্রমের প্রশ্ন। নারীর শরীর কোন টাকার নোট নয় যে ‘চাহিবা মাত্র বাহককে দিতে বাধ্য থাকিবে’। আর বিয়ের মত সামাজিক চুক্তিভিত্তিক ধর্মীয় আবরণে মোড়ানো সম্পর্ক মানে এই নয় যে কৃত যৌনদাসী; যথেচ্ছার এবং যেমন খুশি ব্যবহার।
অতিসম্প্রতি আমি এ প্রশ্নের মুখোমুখি হচ্ছি যে স্বামীর দ্বারা যৌন নির্যাতনের কথা নারীরা #MeToo তে লিখতে পারবে কি না? বিষয়টি ভাববার অধিকার রাখে! সাদা চোখে দেখলে হ্যাঁ। #MeToo প্ল্যাটফর্মে তো এই ধরণের নির্যাতনের কথা লেখাই যায়!! জগৎ জুড়ে নারীরা তো তাদের প্রতি হওয়া নির্যাতনের কথাই লিখছে। সুতরাং নিজ ঘরে স্বামীর দ্বারা নির্যাতনের কথা লিখতে বাঁধা কোথায়? নির্যাতন তো নির্যাতনই। অসম্মান তো অসম্মানই। বেদনা তো বেদনাই- তার তো কোনো ভিন্ন রূপ নেই!! কিন্তু এখানে লাখ টাকার প্রশ্ন হচ্ছে-ঝুঁকি, ন্যায়বিচার আর রাষ্ট্রের ভূমিকা। যেখানে দেশের অধিকাংশ নারী অর্থনৈতিক ভারসাম্যহীনতার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন সেখানে তিনি তার বর রূপি বর্বরের করা বিছানা-বালিশ ও কাগুজে অধিকারের মধ্যে করা যৌন নির্যাতনকে কিভাবে প্রকাশ করবেন? আর যদি করেনও তবে ন্যায় বিচারের দ্বায়িত্ব কে নেবে? যেখানে খুনের বিচার হয় রাষ্ট্রিয় আইনে আর পারিবারিক নির্যাতনের বিচার হয় ধর্ম প্রভাবিত আইনে। যে আইন বিভিন্ন খোঁড়াযুক্তি আর অপযুক্তির মিশেলে এটাই প্রমান করে যে বিবাহিত নারী মূলত: স্বামীর যৌনদাসী। যদি ধরেও নেই কেউ তার প্রতি হওয়া নির্যাতনের কথা প্রকাশ করলো, বিচারও পেলো তো কি বিচার হলো! সমাধান হলো- নিজেদের সর্ম্পক থেকে বেরিয়ে যাওয়া। কিন্তু সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে যাওয়াই যথার্থ সমাধান নয়। ওই অভিযুক্ত পুরষের বিকৃত যৌনাচারের জন্য বা মানবাধিকার বর্জিত যৌনশাসনের জন্য তাকে কি কোন জেল-জরিমানা, শাস্তি দেয়া হবে? না, বাংলাদেশে তেমন কোনো আইন নেই। এমন কি অভিযুক্ত পুরুষকে কোনো সংশোধনাগারে নেয়ার সুযোগও নেই। উপরন্ত পুরনো সর্ম্পক চুকেবুকে গেলে পুরুষকে আরো একটা নতুন ব্যাভিচারী সম্পর্ক স্থাপনের সুবর্ণ সুযোগ করে দেয়। আমাদের যাপিত সমাজ এবং পরিবার তাকে সামাজিক বা পারিবারিকভাবে ব্রাত্যও ঘোষণা করে না। অভিযোগকারী নারীকে উপার্জনক্ষম করার এবং সমাজের মুলস্রোতে যুক্ত করার রাষ্ট্রেরও কোন পরিকল্পনা বা অবকাঠামো নেই।
সুতরাং লক্ষ বছরের জমাট কান্না আরো গাঢ় ঘনীভূত হতে থাকে। আধুনিক কসমোপলিটন সভ্যতা কিংবা প্রযুক্তির জানালাও তাকে মুক্তি দিতে পারে না। শুনেছি, ভুটানে এবং নেপালে এই ধরণের বিবাহ-সম্পর্কযুক্ত নিযার্তনের কিছু আইন আছে। কিন্তু বাংলাদেশে এমন আইনের কথা চিন্তারও অতীত। তবে এবার আমরা সুবর্ণ সময়ের দ্বার প্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছি। এই ধরণের আইনের কথা এবার ভাবতে হবে। প্রয়োজন ও প্রয়োগের কথা যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে।
তবুও বলছি, কোন একজনও যদি দুঃসাহস করে স্বামীর দ্বারা যৌননির্যাতনে ঘটনার ট্রিগারটা টিপেই দেন- সমাজের প্রতি সেটা হবে একটা বড় অবদান। বাড়বে সচেতনতা। যে স্বামী জানেই না কোনটা সঠিক যৌনাচার, কোনটা লঙ্ঘন-তাকে আর ছাড় দেয়া কেন? বরং ধাক্কা খেয়ে ফিরতেও পারে তার সম্বিত।
ম্যারিটাল রেপ একটি সামাজিক অপরাধ
(লেখক)
এমন একজন মেয়ের কথা মনে পড়ছে যাকে তার উচ্চশিক্ষিত স্বামী মহোদয় বাধ্য করতো বাড়িতে সর্বক্ষণ কাপড় ছাড়া হাঁটতে। স্বামীত্বের অধিকার ফলিয়ে তার ওপরে যৌন নির্যাতন করা হতো তাদের শিশুপুত্রকে বেঁধে রেখে। এমন আরেকজন মেয়ের কথা বলতে পারি, সমাজের চোখে ফর্সা, লম্বা,সুন্দরী হওয়ায় পড়ালেখা বন্ধ করে ১৬ বছর বয়সে তাকে বিয়ে দেয়া হয় দ্বিগুণ বয়সী পাত্রের সঙ্গে। বিয়ের রাতে মেয়েটির মা নববিবাহিত এক আত্মীয়াকে গোপনে ডেকে অনুরোধ করেন যেন মেয়েকে ফুলশয্যার আদবকায়দা ভালোভাবে শিখিয়ে দেয়া হয়, স্বামী তার শরীর ছুঁতে এলে মেয়ে যেন তাকে বাধা দিয়ে নারাজ না করে।
এমন আরো একজন নারীর কথা মনে পড়ছে যার স্বামী নিজের মায়ের মন রাখতে, তুচ্ছ নালিশের বিচারে মা এবং শিশুসন্তানের সামনে ফেলে তাকে বেদম প্রহার করেছিলো। সেই থেকে মেয়েটি বহু বছর দাম্পত্যজীবনে শারীরিক সংস্পর্শকে স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারেনি। এ সম্পর্ক তার কাছে ধর্ষণ ছাড়া আর কিছু মনে হয়নি। #MeToo- এর মধ্যে দিয়ে যেখানে সারা পৃথিবীর মেয়েরা নীরবতা,সংকোচ ও লোকলজ্জা ভেঙে ‘যৌন হয়রানি’ নিয়ে মুখ খুলতে শুরু করেছে একটু একটু করে, সেসময় অবধারিতভাবেই ম্যারিটাল রেপ (Marital Rape) বা দাম্পত্য ধর্ষণের প্রসঙ্গটি চলে আসে। বিয়ে যেহেতু দুইজন মানুষের যৌন সম্পর্ককে বৈধতা দেয় সেহেতু বিবাহিত একজন মেয়ে যে ‘স্বামী’ নামের পুরুষ দ্বারা দিনের পর দিন ধর্ষণের শিকার হতে পারে একথা হয়তো অনেকের মাথাতেই আসে না। এমনকি ভিকটিম নিজেও এই নির্যাতন সয়ে নেয়াকে দাম্পত্যের শর্ত বা নিয়তি বলে মেনে নিয়ে নিশ্চুপ থাকে। আমাদের সমাজে অনেকটা অনুচ্চারিত রয়ে যায় যে, ম্যারিটাল রেপ একটি অপরাধ।
Domestic Violence এর আওতায় এনে এর বিচার সম্ভব। বিশ্বের ৫০টিরও বেশি দেশে এ আইন প্রচলিত। #MeToo নিয়ে আমার প্রথম লেখাটিতে মানসিক বন্ধনহীন, শ্রদ্ধাহীন দাম্পত্যে শারীরিক স্পর্শ যে একজন মেয়ের জন্য কতোটা দুঃসহ, গা ঘিনঘিনে ব্যাপার তা উল্লেখ করেছিলাম। বাল্যবিয়েকে আমার কাছে দাম্পত্য ধর্ষণের সবচেয়ে ভয়াবহ এবং স্পষ্ট উদাহরণ বলে মনে হয়। বাংলাদেশে #MeToo তে উঠে আসছে জীবনের নানা বাঁকে যৌন হয়রানির কারণে নারীদের যন্ত্রণার কথা, বেদনার কথা। এখন পর্যন্ত ম্যারিটাল রেপ নিয়ে #MeToo তে কোনো লেখা আসেনি।আসা সহজ না তাও জানি। বিকৃত মুখোশগুলো খুলে দিতে মেয়েরা তাদের সাহসী কলম ধরতে শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে রক্ষা করতে কিছু কলম দুর্বল চিত্রনাট্য লিখতে শুরু করে। ‘ভিকটিম ব্লেমিং গেম’ এর এই দেশে তবু আমি বিশ্বাস করি #MeToo একটি সামাজিক ভয়ের চৌকাঠ পেরোতে পেরেছে। আমি চাইবো সেখানে ম্যারিটাল রেপ নিয়ে কথা হোক, সচেতনতা তৈরি হোক, প্রতিবাদ হোক, এর বিচারে আইনী সহায়তা থাকুক। আমি আশাবাদী।
নারীদের সাহসী কণ্ঠস্বরই পারে সামাজিক ব্যাধি থেকে নিজেদের রক্ষা করতে
(লেখক,বহুজাতিক কোম্পানির ম্যানেজার-পাবলিক অ্যাফেয়ার্স ও সি এস আর)
স্রোতের বিপরীতে নিজের অধিকার আদায়ের লড়াই করতে যেয়ে যুগে যুগে নারীকে বিভিন্ন রকম আদিম পাশবিকতার শিকার হতে হয়েছে। আমরা সবাই জানি সভ্যতার শুরু থেকেই নারী শুধু মাত্র 'মানুষ' হিসেবে তার স্বীকৃতি পাওয়ার অধিকার নিয়ে লড়াই করে যাচ্ছে কিন্ত এখনও সেই আন্দোলনের সিকি ভাগও আদায় হয় নি।
ইদানীং বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে, #MeToo র মাধ্যমে নারীরা নিজেদের যৌন হয়রানির কথা প্রকাশ করছেন, আমি মনে করি যৌন হয়রানি প্রতিরোধে এটা সত্যিই একটি বলিষ্ঠ আন্দোলন । এই উদীয়মান এবং বহমান আন্দোলনের ঝাপটা নারীদের বেশ সাহসী করে তুলছে এবং সারা বিশ্বে যৌন হয়রানি ও যৌন নির্যাতনের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। শুধুমাত্র লোক লজ্জার ভয়ে নারীরা সাধারণত যৌন হয়রানির ঘটনা চেপে রাখে, সামাজিক লজ্জার ভয়ে কেউই কষ্টের কথা বলতে চায়না, আর সেই সুযোগে দিন দিন যৌন হয়রানি প্রকট আকার ধারণ করেছে। ভাল লাগছে এই ভেবে যে নারীরা তাদের নিজেদের মর্যাদা আর আত্মসম্মানের অধিকার আদায়ে সোচ্চার হয়েছেন।
নারীরা যে শুধু পথে ঘাটে বা কর্মক্ষেত্রে যৌন নির্যাতনের শিকার তা নয় বরঞ্চ নিজের নিজের ঘরেও অনেক নারীকে প্রতিনিয়ত হতে হয় যৌন নির্যাতনের শিকার। শহর-গ্রাম, নিম্নবিত্ত-উচ্চবিত্ত, স্বল্প শিক্ষিত- উচ্চশিক্ষিত নির্বিশেষে সব স্তরেই বিবাহিত মেয়েরা এই নির্যাতনের শিকার। স্বামীর সংসারে নিরাপদে থাকার পরিবর্তে প্রতিনিয়ত অনেক মেয়েরা যৌন হয়রানির আতঙ্ক নিয়ে জীবন যাপন করে। প্রতিদিন। অনেক নারীকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে স্বামীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক করতে হয় বা বিকৃত ভাবে স্বামী তাকে যৌনসম্পর্ক স্হাপন করতে বাধ্য করে। কিন্তু রক্ষণশীল সমাজ আর সংসার ভাঙার ভয়ে অনেক নারী এই নির্যাতনের কথা নিজের পরিবারের কাছে বা অন্য কারো কাছেও বলতে সাহস পায় না। যেহেতু এই সমাজে মনে করা হয় নারীর শরীরের মালিক তাঁর স্বামী, সেহেতু স্বামী চাইলে যখন তখন যে কোন ভাবে, ইচ্ছা অনিচ্ছায় স্ত্রীর শরীর ভোগকরতে পারবে- এই মানসিকতা যে কতটা অমানবিক সেটা একটু কল্পনা করলেই বোঝা যায়।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) নারী নির্যাতন বিষয়ের এক জরিপ থেকে জানা যায় বিবাহিত নারীদের ৮৭ শতাংশই স্বামীর মাধ্যমে কোনও না কোনও ধরনের নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। এর মধ্যে স্বামীর দ্বারা যৌন নির্যাতনের শিকার হয় ৩৬ শতাংশ।
শারীরিক, মানসিক চাপ প্রয়োগ করে জোরপূর্বক যৌন সম্পর্ক স্থাপন করা একটি গুরুতর সামাজিক অপরাধ এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন সেটা যার দ্বারাই ঘটুক না কেন। যেহেতু নারীর পথচলা মসৃণ নয় তাই এব্যাপারে নারীকেই যথেষ্ট সাহসী এবং সোচ্চার হতেহবে তা না হলে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ আন্দোলন অনেকটা অসম্পূর্ণ রয়ে যাবে। শুধুমাত্র আমাদের সাহসী কণ্ঠস্বরই পারে এসব সামাজিক ব্যাধি থেকে আমাদের রক্ষা করতে।
আমরা দেখছি যে #MeToo ইতিমধ্যে বেশ শক্তিশালী আন্দোলন বলে সারা বিশ্বে বিশেষ ঝড় তুলছে, তাই আমি মনে করি এখনই আমাদের সব রকম যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে আরও সোচ্চার হতে হবে। সম্মতি ছাড়া যে কোন ধরনের শারিরীক নির্যাতন বা ধর্ষণ , এই বিষয়টা নিয়েসামাজিক সচেতনতা বাড়ানোর মাধ্যমে এই আন্দোলন আরও জোরদার করা সম্ভব এবং আমি মনে করি #MeToo মুভমেন্ট এই ক্ষেত্রেও বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারে।
ক্ষত থাকলে তাতে আলো লাগতে দেওয়া হোক
(সাংবাদিক, উন্নয়ন কর্মী)
হ্যাশট্যাগমিটু চলে এসেছে বাংলাদেশে। চলে এসেছে ঘরের দরজায়! শিক্ষকের কাছে, দপ্তরে, গাড়িতে বা রাস্তায় নারীর উপর পুরুষের অযাচিত আচরণ, অশ্লীল আহ্বান এবং যৌন হয়রানির উপর থেকে পর্দা সরছে ধীরে ধীরে।
কিন্তু বরাবরই যে বিষয়টা আমরা সচেতন ভাবে এড়িয়ে যাই তা হলো নিজের ঘরের দিকে তাকানো! আলোর নিচের অন্ধকারের মত নারীর বা পুরুষের ঘরে যৌন হয়রানিকে সমাজের চোখে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য আমরা ততোটাই মরিয়া যতটা মরিয়া কুসংস্কার মানার ক্ষেত্রে!
যদিও পুরুষ ঠিক নয় বাচ্চা ছেলে, কিশোরেরা একটা বয়স পর্যন্ত বিকৃত মানসিকতার শিকার হয়, কিন্তু নারীর জীবনে তা হয় আজীবনের অভিশাপ। এমনকী বিয়ের পরেও নারীর উপর চলে যৌন অত্যাচার!
আচ্ছা, বিয়ে হলেই কী পুরুষ যখন তখন নারীকে ভোগ করার অধিকার পায়! তার অনিচ্ছা- চাওয়া –পাওয়ার উর্ধ্বে গিয়ে! সম্প্রতি বিবিসি বাংলায় প্রকাশিত এক নারীর সাক্ষ্যাৎকার থেকে প্রমাণিত হয়েছে বিয়ের পরেও নারীরা নিজের বেডরুমে যৌন সন্ত্রাসের শিকার হয়! শুধু তাই নয়, অনেক বিকৃত রুচির সম্মুখিন হতে হয় নারীকে।
বিয়ে একটি সামাজিক দলিল, যার মাধ্যমে শারীরিক এবং মানসিকভাবে শুধু দু’টো মানুষ নয়, দু’টো পরিবার এক হয়ে সামাজিক সংগঠন তৈরী করে! কিন্তু এই সমাজে যেন নারীকে পুরুষ গ্রহণ করে তার ঘরের একটি আসবাবের মতন! যার কাজ ঘরের শোভা বাড়ানো, কখনো বিছানা উত্তপ্ত করার জন্য, কখনো উত্তপ্ত চুলোয় খাবারে স্পেশাল টাচ দেওয়ার জন্য! এই চিন্তা ভাবনা ছোটবেলা থেকেই ছেলেদের মাথায় ঢুকিয়ে নারীকে সেই যুগ যুগ ধরে একই অবস্থানে রাখছে তথাকথিত এই সমাজ! যার অংশ অন্য কোনও নারীই এবং পুরুষ। আর শারীরিক ভাবে দূর্বল হওয়াতে তাকে ক্রমাগত শোষন করছে এই পুরুষ!
এখন হলো আসল প্রশ্ন, এই নির্যাতন #MeToo ক্যাম্পেইনের ছায়ায় আসে কিনা? ব্যক্তিগত ভাবে আমি মনে করি, এটি অবশ্যই নির্যাতন! নারীর উপর যে কোনও সহিংস যৌন অত্যাচারই #MeToo-এর বিষয় হয়ে উঠতে পারে, সেটা ঘরে হোক বা বাইরে হোক! আর যে পরিমাণ গৃহসন্ত্রাসের শিকার নারী হয়- সবার আগে এ বিষয়টাই সামনে আসা বাঞ্ছণীয়! যে পুরুষ তার জীবনসঙ্গীকে এতোটুকু সম্মান করতে পারেনা, তার দ্বারা দেশ বা সমাজের কি উন্নতি হবে!ওই সব পুরুষ মানুষগুলোর মুখোশটা খুলে মুখটা সামনে আসলে হয়তো সমাজ আরও সচেতন হবে! আর কোনও নারী পরদিন ঘাড়ের ক্ষত লুকাতে বড় ওড়না পরে আসবে না ঘরের বাইরে! ক্ষত থাকলে তাতে আলো লাগতে দেওয়া হোক! মুক্ত বাতাসে শুকিয়ে যাক সে ঘা! আর আঘাত আসুক সেই সকল পুরুষের উপর যার মনে বাস করে পশুশক্তি।
ছবি: ইনস্টাগ্রাম ও প্রাণের বাংলা



কিছু মায়া রয়ে গেল…
16 Oct 2025
1015 বার পড়া হয়েছে

শীত চায়…
2 Oct 2025
530 বার পড়া হয়েছে

লিখছি তোমাকে শরৎকাল...
26 Sept 2025
1700 বার পড়া হয়েছে

আমি ঝড়ের কাছে…
18 Sept 2025
2655 বার পড়া হয়েছে

ইঁদুর, ইঁদুর…
30 Jan 2025
6695 বার পড়া হয়েছে

হাঁটতে হাঁটতে…
23 Jan 2025
5525 বার পড়া হয়েছে

এই গিটারটা বন্দুক হয়ে যেতে পারে...
16 Jan 2025
6135 বার পড়া হয়েছে

পুরুষ নেই...
9 Jan 2025
4765 বার পড়া হয়েছে

শীতকাল ভালোবেসে…
2 Jan 2025
4520 বার পড়া হয়েছে

এত লোক জীবনের বলী…
19 Dec 2024
4245 বার পড়া হয়েছে

চিরদিন তোমার আকাশ তোমার বাতাস…
12 Dec 2024
2530 বার পড়া হয়েছে

জয়া’র জয়
5 Dec 2024
3525 বার পড়া হয়েছে

দু‘শ সেকেন্ডের সেই টেলিফোন কল
28 Nov 2024
3295 বার পড়া হয়েছে

কাফকার আঁকাজোঁকা
21 Nov 2024
2770 বার পড়া হয়েছে

স্বৈরাচার স্বৈরাচার…
14 Nov 2024
7445 বার পড়া হয়েছে

ডার্ক ট্যুরিজম
7 Nov 2024
5880 বার পড়া হয়েছে

ফেরা…
31 Oct 2024
2895 বার পড়া হয়েছে

অনুজ্জ্বল বিষের পাত্র
24 Oct 2024
2915 বার পড়া হয়েছে

ঋত্বিকের সুচিত্রা সেন
17 Oct 2024
2140 বার পড়া হয়েছে

হেমন্তের অরণ্যে পোস্টম্যান
10 Oct 2024
2910 বার পড়া হয়েছে

গোয়েন্দা কাহিনি এখন…
1 Oct 2024
2390 বার পড়া হয়েছে

ঝড়ের কেন্দ্র
19 Sept 2024
2335 বার পড়া হয়েছে

তখন হাসপাতালে…
11 Jul 2024
4550 বার পড়া হয়েছে

ছাতার মাথা ...
4 Jul 2024
4350 বার পড়া হয়েছে

আমি, তুমি ও ম্যাকবেথ…
27 Jun 2024
3740 বার পড়া হয়েছে

কফির কাপে ঝড়…
13 Jun 2024
2870 বার পড়া হয়েছে

চশমার কাচে সমুদ্র
6 Jun 2024
2505 বার পড়া হয়েছে

মেরিলিন মনরো আর রুবি রায়
30 May 2024
3400 বার পড়া হয়েছে

খুন জখমের গল্পে নারীরা...
9 May 2024
2950 বার পড়া হয়েছে

পথের মানুষ…
3 May 2024
2980 বার পড়া হয়েছে

দহন
25 Apr 2024
3745 বার পড়া হয়েছে

আয়না অনেক গল্প জানে…
10 Apr 2024
5165 বার পড়া হয়েছে

গোলাপের নিচে...
28 Mar 2024
3990 বার পড়া হয়েছে

মুখে তার...
21 Mar 2024
2290 বার পড়া হয়েছে

লেনিনের যতো ভালোবাসার চিঠি…
14 Mar 2024
3195 বার পড়া হয়েছে

আমাদের ছুটি ছুটি ছুটি...
29 Feb 2024
5625 বার পড়া হয়েছে

যদি নির্বাসন দাও
22 Feb 2024
3175 বার পড়া হয়েছে

শীত চলে গেছে পরশু...
8 Feb 2024
3180 বার পড়া হয়েছে

মনে পড়লো তোমাকে বইমেলা...
1 Feb 2024
3805 বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব নির্জন বারান্দায়...
25 Jan 2024
2930 বার পড়া হয়েছে

ঋত্ত্বিক ঘটকের বউ…
11 Jan 2024
3490 বার পড়া হয়েছে

সুচিত্রা সেনের সানগ্লাস
4 Jan 2024
5575 বার পড়া হয়েছে

স্মৃতি পিপীলিকা…
28 Dec 2023
4410 বার পড়া হয়েছে

হাতে বোনা সোয়েটার আর…
21 Dec 2023
5510 বার পড়া হয়েছে

দেয়ালে উঠছে, দেয়াল ভাঙছে
13 Dec 2023
4990 বার পড়া হয়েছে

শীত এক মায়া
7 Dec 2023
5540 বার পড়া হয়েছে

উঁকি...
30 Nov 2023
3820 বার পড়া হয়েছে

দেশলাই জ্বালতেই…
23 Nov 2023
9120 বার পড়া হয়েছে

তোমার ও আঁখির তারায়...
9 Nov 2023
5230 বার পড়া হয়েছে

পাগল ...
26 Oct 2023
5085 বার পড়া হয়েছে

শীতের খোঁজে...
19 Oct 2023
5410 বার পড়া হয়েছে

বৃষ্টিতে থাকলো নির্জন সাইকেল...
5 Oct 2023
6590 বার পড়া হয়েছে

নারী ভয়ংকর
28 Sept 2023
9960 বার পড়া হয়েছে

তবুও সন্ধ্যা আসে…
14 Sept 2023
6880 বার পড়া হয়েছে

হিটলারের নেশা
7 Sept 2023
9325 বার পড়া হয়েছে

ক্লাপারবোর্ড
31 Aug 2023
12935 বার পড়া হয়েছে

মোনালিসার গোয়েন্দারা
23 Aug 2023
3170 বার পড়া হয়েছে
.png )
খেলা যখন…
15 Jun 2023
2975 বার পড়া হয়েছে

ইতি, চায়ের দোকান...
1 Jun 2023
6875 বার পড়া হয়েছে
(1).png )
লেখকদের ঘরবাড়ি
10 May 2023
2805 বার পড়া হয়েছে

মেয়েরা প্রেমের চিঠি লেখে না
20 Apr 2023
6695 বার পড়া হয়েছে

বৈশাখে আঞ্চলিক খাবার..
13 Apr 2023
2255 বার পড়া হয়েছে

স্ট্রিট ফাইটিং ইয়ার্স...
6 Mar 2023
2515 বার পড়া হয়েছে

হাওয়ায় লেগেছে শরতের গন্ধ।
4 Jan 2023
2940 বার পড়া হয়েছে

রাজনৈতিক ফুটবল
4 Jan 2023
3320 বার পড়া হয়েছে

হাসপাতাল থেকে…
23 Jun 2022
2290 বার পড়া হয়েছে

একলা মাদুর…
16 Jun 2022
1835 বার পড়া হয়েছে

পালাতে হয়েছিলো মোনালিসাকে
7 Jan 2021
3055 বার পড়া হয়েছে

হেমন্তের অরণ্যে পোস্টম্যান
29 Oct 2020
2725 বার পড়া হয়েছে

গডফাদার ৫২ বছরে
22 Oct 2020
2460 বার পড়া হয়েছে

দানব অথবা দানবীয়...
8 Oct 2020
2285 বার পড়া হয়েছে

দুই শীতের মাঝখানে
1 Oct 2020
2290 বার পড়া হয়েছে

আরেক বিভূতিভূষণ...
17 Sept 2020
1845 বার পড়া হয়েছে

আয়নায় একা উত্তম...
3 Sept 2020
2015 বার পড়া হয়েছে

দ্বিতীয় পথের পাঁচালী
27 Aug 2020
2545 বার পড়া হয়েছে

ভালো না-বাসার কাল
13 Aug 2020
1790 বার পড়া হয়েছে

যতদূর থাকো ফের দেখা হবে
5 Aug 2020
1950 বার পড়া হয়েছে

বিপজ্জনক মানিক
2 Jul 2020
1920 বার পড়া হয়েছে

নিখোঁজ হয়েছিলেন আগাথা ক্রিস্টিও
23 May 2020
1775 বার পড়া হয়েছে

আমাকে মনে পড়ে?
14 Apr 2020
1705 বার পড়া হয়েছে

আমি ইতালী থেকে লিখছি...
29 Mar 2020
1850 বার পড়া হয়েছে

পৃথিবীর গভীর গভীরতর অসুখ এখন...
12 Mar 2020
2425 বার পড়া হয়েছে

মুখোমুখি বসিবার...
27 Feb 2020
1920 বার পড়া হয়েছে

শীতে ভালোবাসার পদ্ধতি
6 Feb 2020
3760 বার পড়া হয়েছে

হিব্রু ভাষায় কাফকার চিঠি
30 Jan 2020
1930 বার পড়া হয়েছে

ইভা ব্রাউনের অন্তরাল
23 Jan 2020
2155 বার পড়া হয়েছে

শীতের স্মৃতি
9 Jan 2020
2000 বার পড়া হয়েছে

কেক কুকিজের গন্ধে ...
24 Dec 2019
1950 বার পড়া হয়েছে

জুতার ভেতরে...
19 Dec 2019
1675 বার পড়া হয়েছে

খুন হয়েছিলেন আলবেয়ার কামু
12 Dec 2019
2420 বার পড়া হয়েছে

মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের চাকরিবাকরি
5 Dec 2019
1765 বার পড়া হয়েছে

পৃথিবী বিখ্যাত পোস্টার যত
28 Nov 2019
2690 বার পড়া হয়েছে

পেঁয়াজের পিঁয়াজী
21 Nov 2019
2150 বার পড়া হয়েছে

সিনেমায় দু’চাকার ঝড়
14 Nov 2019
1520 বার পড়া হয়েছে

শেষদৃশ্যে জুলিয়াস ফুচিক
7 Nov 2019
2445 বার পড়া হয়েছে

অভিমানে কি দেশ ছাড়বেন সাকিব
31 Oct 2019
1715 বার পড়া হয়েছে

ফ্রাঙ্কেনস্টাইনের দানবেরা
17 Oct 2019
2795 বার পড়া হয়েছে

স্বপ্ন, দু:স্বপ্নের পুরুষ
10 Oct 2019
1715 বার পড়া হয়েছে

স্মৃতির রুমালে শিউলি...
3 Oct 2019
5770 বার পড়া হয়েছে

নির্ঘুম শহরে...
26 Sept 2019
1950 বার পড়া হয়েছে

ধূসর পাণ্ডলিপি
19 Sept 2019
1955 বার পড়া হয়েছে

এক্সপোজড...
12 Sept 2019
1835 বার পড়া হয়েছে

নারী ও শাড়ি ...
5 Sept 2019
2340 বার পড়া হয়েছে

পথের পাঁচালী’র ৬৪
29 Aug 2019
2075 বার পড়া হয়েছে

প্রেম আর যৌনতায় তারা
22 Aug 2019
1795 বার পড়া হয়েছে

যৌনতায়, বিদ্রোহে তাঁরা...
1 Aug 2019
1880 বার পড়া হয়েছে

খুনের সময়ে...
25 Jul 2019
1895 বার পড়া হয়েছে

পথ...
11 Jul 2019
1610 বার পড়া হয়েছে

যে কোন দলই ছিটকে পড়তে পারে
27 Jun 2019
2130 বার পড়া হয়েছে

বৃষ্টিকাল কবে আসবে নন্দিনী
20 Jun 2019
2430 বার পড়া হয়েছে

স্নানঘরের গান...
2 Jun 2019
1945 বার পড়া হয়েছে

আমার কোনো ভয় নেই তো...
23 May 2019
1805 বার পড়া হয়েছে

রেখার ফারজানা...
2 May 2019
1775 বার পড়া হয়েছে

হিংসায় উন্মত্ত পৃথিবী
25 Apr 2019
3745 বার পড়া হয়েছে

নীলকন্ঠ পাখির খোঁজে...
18 Apr 2019
1880 বার পড়া হয়েছে

আপুদের পথের ভাই ...
4 Apr 2019
2135 বার পড়া হয়েছে

আমাদের প্রাণের বাংলা
28 Mar 2019
2200 বার পড়া হয়েছে

ক্যানভাসে ঝরে পড়া অসুখ
21 Mar 2019
1780 বার পড়া হয়েছে

শেষদৃশ্যে লোরকা
14 Mar 2019
2020 বার পড়া হয়েছে

নেশার ঘোরে লেখক
7 Mar 2019
3225 বার পড়া হয়েছে

একটি বইয়ের গল্পের সঙ্গে...
1 Mar 2019
2080 বার পড়া হয়েছে

বই করেছি চুরি...
21 Feb 2019
3935 বার পড়া হয়েছে

সকালবেলার গুলজার
7 Feb 2019
2070 বার পড়া হয়েছে

বইমেলায় প্রেম...
31 Jan 2019
1570 বার পড়া হয়েছে

অ্যান্ড এ স্পাই...
24 Jan 2019
2490 বার পড়া হয়েছে

আপনার সন্তান কি নিরাপদ
10 Jan 2019
1495 বার পড়া হয়েছে

পুষ্পহীন যাত্রাশেষে মৃণাল সেন
3 Jan 2019
1890 বার পড়া হয়েছে

নিষিদ্ধ যতো বই আর সিনেমা
13 Dec 2018
3145 বার পড়া হয়েছে

অসুখী মানুষ
6 Dec 2018
1960 বার পড়া হয়েছে

দাম্পত্য সম্পর্কে #MeToo
29 Nov 2018
2205 বার পড়া হয়েছে

দুই নম্বরি...
22 Nov 2018
2105 বার পড়া হয়েছে

অশ্লীল গল্প
8 Nov 2018
5670 বার পড়া হয়েছে

ফুলগুলো সরিয়ে নাও, আমার লাগছে
1 Nov 2018
3195 বার পড়া হয়েছে

লাভ রানস ব্লাইন্ড
25 Oct 2018
2080 বার পড়া হয়েছে

শেষ দৃশ্যে মান্টো
18 Oct 2018
2135 বার পড়া হয়েছে

আমাদের সেই বারান্দায়...
11 Oct 2018
1655 বার পড়া হয়েছে

শীতকাল কবে আসবে সুপর্না?
4 Oct 2018
2340 বার পড়া হয়েছে

কোমায় আমাদের সিনেমা
20 Sept 2018
1635 বার পড়া হয়েছে

আজো বিভূতিভূষণ...
13 Sept 2018
1775 বার পড়া হয়েছে

ভীষণ অচেনা ও একা...
6 Sept 2018
1725 বার পড়া হয়েছে

গোপন কথা...
9 Aug 2018
1760 বার পড়া হয়েছে

খোলা চিঠি ও চুমু
26 Jul 2018
2435 বার পড়া হয়েছে

ফ্রিডা কাহলো এক সূর্যমুখী ফুল
19 Jul 2018
1830 বার পড়া হয়েছে

ঝিনুক নীরবে সহো...
5 Jul 2018
2035 বার পড়া হয়েছে

ফুটবল- রঙ্গ ভরা বঙ্গে
28 Jun 2018
1725 বার পড়া হয়েছে

জানালা কী জানালো...
11 Jun 2018
3485 বার পড়া হয়েছে

বিষয় বাসনা
19 Apr 2018
2470 বার পড়া হয়েছে

মনের রঙ...
15 Feb 2018
1895 বার পড়া হয়েছে

দাড়ি কান্ড...
18 Jan 2018
3070 বার পড়া হয়েছে

চোর, চোর...
28 Dec 2017
4645 বার পড়া হয়েছে

বাঙালির আহার...আহা রে...
21 Dec 2017
3615 বার পড়া হয়েছে

চরণ ধরিতে দিয়ো গো আমারে...
7 Dec 2017
3625 বার পড়া হয়েছে
স্বত্ব © ২০১৬ - ২০২৩ প্রাণের বাংলা।
সম্পাদক ও প্রকাশক: আবিদা নাসরীন কলি।
Email: Article: [email protected], Avertising: [email protected]
Phone: +8801818189677, +8801717256199