গুটি গুটি পায়ে শীত এসে পড়েছে। জানালায় কান পেতে শুনি ঝরাপাতার কান্না। জলদি জলদি পড়ে আসছে বিকেলের আলো। টুকরো রোদ্দুর ছুঁয়ে দেয় বিকেলের চায়ের কাপ। আর মাত্র ক’দিন! শীতের চাদরে জড়োসড়ো হবে রোদ ভেজানো চিবুক। ধানের শীষে বইবে খামখেয়ালী বাতাস। ঘাসের গায়ে মাথা রাখবে শিশির। ভালোবাসার কাঙাল আমরা অসহ্য গরম থেকে রেহাই পেতে শীতকে বড়ো নিজের করে পেতে চাই। শীতের গায়ে হেলান দিয়ে নষ্টালজিক হই। তাইতো শীত বড়ো আপন। শীত বড়ো প্রশ্রয়ের। এবার প্রাণের বাংলার প্রচ্ছদ আয়োজনে আসন্ন শীত নিয়ে রইলো ‘শীত এক মায়া’।
শিশির স্নানের পর
সন্ধ্যা লাগার মুখে এক রহস্যের চাদর যেন কোনো অলৌকিক মায়ায় আকাশ থেকে নেমে আসতে থাকে ধরায়। কোমল শিশির পরশ ভিজিয়ে দেয় পৃথিবীও প্রান্তর। বুকের ভিতর এক খর পাটাতন ভিজতে থাকে আমারও।
ছোটো হয়ে আসতে থাকা কর্কটের ভ্যাপসা আর্দ্রতা আর কর্কশ গরমের দাপুটে দিন ফিরতি পথ ধরে চটচটে ত্বকের আস্তানা ছেড়ে। গ্রীষ্মকে হটাতে সময়ের সীমানা অতিক্রম করে সন্তর্পণ শীত দখল নিতে শুরু করে প্রহরের। দুপুর গড়িয়ে বিকেলের পথ ধরে সে গোধূলির দিকে হাঁটতে থাকে কদম কদম; মাথার ভিতর আমার ডানা মেলতে থাকে চঞ্চল প্রজাপতি। মৃদুমন্দ হিমেল বাতাস যখন চুম্বনে প্রবল এলোমেলো করে দিতে থাকে, ভালোবাসা ছাড়া কীসের জন্যে আর আকাঙ্ক্ষারা জেগে থাকে তখন!
সাঁঝ গড়িয়ে রাত যতই চেপে বসতে থাকে, নাকে ভেসে আসে শিশির স্নাতবৃক্ষ-পত্র-পল্লবের এক আশ্চর্য সোঁদা সুবাস। দিন পেরুলে চাঁদের সখ্যে সেইখানে এসে মিশে খেজুর গাছে হাঁড়ি বসাবার ঘ্রাণ। সেই গন্ধ নাকে লেপটে থাকে নির্ঘুম ভোর অব্দি। ভোরতো নয় যেন কোন আয়েশি সম্রাজ্ঞীর ধীরতম লয়ে ঘুম ভাঙবার পরব। অমন প্রতি ভোরে স্মৃতিরা এক ছুটে চলে যায় নানা বাড়ির উঠোন কিনারে মাটির ঘর-বারান্দায়— সারি দিয়ে বসে থাকা তুতো ভাইবোনদের মিছিলে। মুখ থেকে চিমনির মতো ধোঁয়া বের করবার একটা প্রতিযোগিতা হতো রোজ। সেই আসর ভাঙতো ধোঁয়া ওঠা পিঠা জুড়িয়ে যাবার আগে ভাগে নাশতা খেয়ে নেবার জন্য মুরুব্বিদের তাড়ায়। মুখ ধুতে গিয়ে পুকুর ঘাটে আমরা তখন সবগুলো পুচকা- পুচকি একেক জন হয়ে উঠি বিশাল দার্শনিক। ধ্যানস্থ হয়ে দেখি — গোটা পুকুরটাকে যেন কেউ চুলায় চড়িয়ে দিয়েছে, আর জলের শরীর থেকে রাগ লহরীর শুরুর মতো ধীর লয়ে নেচে নেচে উঠে যাচ্ছে বাষ্প- মেঘ। অমন 'কল্যাণ ঠাট' উদাস সকালে রোজ বুকের ভিতর মেলে দিতো যে বিহ্বল বৈরাগ্যের কপাট। শীত আসতে শুরু করলে আজো তা কাঁপায়। হিমে নয়, শৈশবের উৎসব স্মৃতিময় জীবনের গানে, তারুণ্যের ছায়া মেলে রক্তে জেগে ওঠা প্রেমে। অঘ্রাণের শেষ দিন গুলো আমার পৌষালি কুসুম উষ্ণ রোদের আগমন প্রহর প্রতীক্ষা, গোপন সঞ্চয়ে উষ্ণতার আধার, তারুণ্যের উন্মাতাল সময়ের তীব্রতম শিহরণ— শীত আগমনী মানেই আরাধনার খোলা চুল রোদে শুকাবার পর ঝরা পাতার ওড়া উড়ি শেষে ক্লান্ত সন্ধ্যা - বাতাস।
শীত আমার প্রেমিক হয়
শীত আমার প্রেমিক হয়। গরমের মতো ক্লান্তিকর দমবন্ধতায় আমি হাসফাস করতে করতে ভাবি শীতকাল কবে আসবে সুপর্ণা? আমি একটু দম ফেলতে চাই। গরমের ক্লান্তি থেকে নিজেকে মুক্তি দিয়ে মুখ লুকাতে চাই কুকড়ে যাওয়া ঠাণ্ডায়। শীত বড়োই আলসে। তার আমাকে ক্লান্ত করে দেয়ার তাড়া নেই। ঘেমে শ্রান্ত অবসন্ন করে দেয়ার মতো শত্রুতা নেই। অলস উষ্ণতা আছে। মমতায় জড়িয়ে রাখার আহবান আছে। আমারও দেহেমনে প্রচণ্ড আকাঙ্ক্ষা আত্মসমর্পণ করি। কিন্তু উপায় নেই। আমার রয়েছে কর্ম।
কর্মের ডাকে, জগত সংসারের আহবানে আমার তুমুল প্রার্থিত প্রেমিকের বাহুডোর ঠেলে বেরিয়ে পড়তে হয়। শীত আমার প্রেমিক হয়। আমি প্রানপণে তার কাছে আত্মসমর্পণ করতে চাই অথচ বাইরের কর্মজগতের সঙ্গে তার জন্মের বৈরিতা।
শীতের মাঝে নস্টালজিয়া থাকে। উষ্ণতার আরাম অগ্রাহ্য করে রাত জেগে ফাইনাল পরীক্ষার প্রস্তুতির নস্টালজিয়া। পরীক্ষা শেষে মামারবাড়ির স্বাধীন দেশে যেমন ইচ্ছে চলার স্বাধীনতার নস্টালজিয়া,নতুন ক্লাসে নতুন বইয়ের নস্টালজিয়া। মানুষের কর্মব্যস্ত জীবন তো কেবল নস্টালজিয়ার সুখে নাক ডুবিয়ে থাকার জীবন। এর চেয়ে বড় কোন আনন্দের সন্ধান এখনো পায়নি মানুষ।
শীততো উৎসবের কাল। পৌষ পার্বণ থেকে শুরু করে ব্যক্তি কিংবা সামাজিক নানা উৎসবের। আমাদের এই ষড় ঋতুর দেশটায় ক্রমেই দুই ঋতুতে পরিবর্তিত হয়ে যাওয়ার বেদনাক্লিষ্ট মানুষ অপেক্ষায় থাকে শীতের। স্বল্পায়ু শীত, এসেই বলে যাই। তবু একে ঘিরে কতো পরিকল্পনা, অপেক্ষা আর কাব্যযাপন।অপেক্ষার দীর্ঘ প্রহরে শীত বড়োই ক্ষুদ্রায়তন। তবু এই স্বল্প সময়ে স্বল্প আয়ের মানুষের ভোগান্তির অন্ত নেই। যে শীতের জন্য অপার অপেক্ষা আমাদের সে শীতেই একটু গরম কাপড়ের জন্য একটু উষ্ণ আশ্রয়ের জন্য কী আকুতি তাদের।
যখন খুব কাছে থেকে তাদের আকুতি দেখি তখন আমার বিপ্রতীপ আকুতি অপরাধী হয়ে যায়। তবু প্রাকৃতিক নিয়মে শীত আসে। আমি শীতের অপেক্ষায় গ্রীষ্ম কাটাই। শীত আমার প্রেমিক হয়। তাকে কাছে পাবার আকুল আকাঙ্ক্ষা আমার বারবার টুটে যায় জগত সংসারের ডাকে।
কে কোথায় কুয়াশায় হারিয়ে যায়
অক্টোবরের শেষাশেষি এখানে শীত পড়তে আরম্ভ করে। দিন গড়িয়ে বিকেল নামলে দেখা যায়, দূরে গাছগাছালির গায়ে ধূসর একটা ধোঁয়ার আস্তরণ। জনবসতির গায়েও তেমনই একটা ধূসর ধোঁয়ার চাদর। পাথুরে নদীর ডাঙায় যেসব গাছ, তারা পাতা খসাতে আরম্ভ করেছে। তাদের বাকলে চলটা উঠে উঠে ভেতরের সাদা রঙ বেরিয়ে পড়েছে। সেই সাদা রঙকে মনে হয় লম্বা লম্বা সব ডোরাকাটা দাগ। সন্ধ্যের হাওয়ায় কেমন একটা রুক্ষ পোড়া কাঠকয়লার গন্ধ পাওয়া যায়।
দীপাবলি উপলক্ষ্যে এই আধা গঞ্জ এলাকায় বেশ বড়ো একটা মেলা বসে। এই মেলার সূত্রপাত স্বাধীনতার অনেক আগে। সেই ১৯১৮ সালে। চা বাগান ঘেরা এই অঞ্চলে সেসময় আমোদপ্রমোদের কোনো উৎসই ছিল না। এই মেলাই ছিলো আমোদপ্রমোদের উৎস। চারপাশের চা বাগান থেকে মাইলকে মাইল পথ পায়ে হেঁটে লোকজনেরা আসতো এই মেলায়। সারা রাত মেলায় কাটিয়ে ভোর ভোর ফিরে যেত ঘরে। এখনো এই মেলা বসে। গত দু’বছর অবশ্য অতিমারীর কারণে বন্ধ ছিলো।
এই মেলা চলে ১২ দিন। মেলা শেষ মানেই পাখনা বিস্তার করে শীতের শুরু। সেই অর্থে এই মেলাকে আমার এখানে শীতের গেটওয়ে বলা যায়। মেলা শেষ, উৎসব উল্লাস হর্ষধ্বনি শেষ, ভারী জমাট শীত এসে যেন এই এলাকায় চেপে বসে। আধুলির মতো দিন কখন গড়াতে গড়াতে টুক করে ফুরিয়ে যায়, সন্ধ্যে হতে না হতেই চারপাশে কেমন একটা নির্জনতা নামে। হঠাৎ কাঙাল হয়ে যাওয়া বাজারে সাদা সাদা বিজলি বাতি জ্বলে। চাইনিজ খাবারের দোকানগুলোয় খাবার ভাঁপানোর বাসনপত্রের চিপি দিয়ে সোঁ সোঁ শব্দে স্টিমের ধোঁয়া ওড়ে। মূল বাজারটা থেকে অক্টোপাসের শূঁড়ের মতো চতুর্দিকে রাস্তা ছড়িয়ে আছে। তার যে কোনো একটি রাস্তা ধরে কিছুক্ষণ হাঁটলেই দোকান-পসরা শেষ। শীতের ভারী অন্ধকারের শুরু। বাজার ছাড়িয়ে নদীর দিকে যে রাস্তা হাসিমারা, জয়গাঁর দিকে গেছে, সেই রাস্তা ধরে হেঁটে অন্ধকারে ঢাকা ব্রিজের অ্যাপ্রোচে দাঁড়ালে উত্তরে ভুটান পাহাড়ের ক্ষুদে ক্ষুদে লাল বা মেটে রঙের আলোর বিন্দুগুলি দেখা যায়।
ছেলেবেলায় দেখতাম শীতের আসছি আসছি করা শুরু হতেই কোনো রোদোজ্জ্বল দিনে সম্বৎসর দেয়ালে গায়ে গা লাগিয়ে উঁচু মাথার কাঠের আলমারির পাল্লা খুলে ফেলা হতো। আলমারির পাল্লা খোলা যে কী উৎসাহের আর রোমাঞ্চের ছিলো! মনে আছে আলমারি খোলার সময় মাসির গায়ে লেপ্টে দাঁড়িয়ে থাকতাম। মাসি আলমারি থেকে টেনে টেনে নামাতো উলের সোয়েটার, লাল-নীল ছাপ দেওয়া চাদর, শাল, লেপের ওয়ার। আলমারির ভেতর থেকে কাঠ আর ঠাসিয়ে রাখা জামাকাপড়ের মিলিত একটা ভ্যাপসা গন্ধ আসতো। এইভাবে শীতের পোশাক-আষাক বের করার সময় হঠাৎ ঝট করে বেরিয়ে পড়তো আমারই কোনো ভুলে যাওয়া শার্ট বা মোটা কাপড়ের বড়োদের কোনো প্যান্ট, যেটা সেসময় দিব্যি আমি পরতে পারবো বা এইরকম পোলো গলার ভেস্ট। আলমারির একেবারে নীচের তলায় ভাঁজ করে রাখা থাকতো দিদিমার নিজের হাতে তৈরি অসংখ্য কাঁথা। ক্ষুদে ক্ষুদে ফোঁড়ে তার চারদিকে চওড়া কল্কা, মাঝখানে ফুল। কখনো সুতোর রঙ বদলে একপ্রস্থ একপ্রস্থ সেলাই। বরাবর দেখেছি দিদিমার দারুণ বাতিক ছিলো এই কাঁথা তৈরির ব্যাপারে এবং তাঁর সেলাইয়ের হাতও ছিলো নিপুণ। সেই কাঁথাগুলো ব্যবহার হতো না বলে বছরের পর বছর একইভাবে ঠাসা থাকতো আর ওইভাবে ঠাসা থাকতে থাকতে ভাঁজের কোনায় ধুলো আর কাঠের গুঁড়োর মরিচা ধরতো। একবার পেলাম একটা হাত-কাটা কোটের ভেতরে যে ওয়েস্টকোট পরে- সেরকম একটি জামা। সেই জামাটি বোধহয় কিনেছিলো আমার ছোটমামা এবং তাকে বাতিল করেছিলো। সেই ওয়েস্ট কোট মার্কা জামা পেয়ে এবং তার ভোগের স্বত্ব পেয়ে সে আমার কী আনন্দ!
শীতের প্রসঙ্গ উঠলে আমার ছোটবেলার মাঠে গা ঘেঁষাঘেঁষি করে দাঁড়িয়ে থাকা কতগুলি খেজুরগাছের কথা মনে পড়ে। মাঠটি ছিলো পাড়ার অঞ্জলিমাসীদদের। সেই মাঠের সীমানায় ছিলো বাসকপাতার ঝোপ আর ট্যাঁরাব্যাঁকা বাতাবিলেবুর গাছ। খেজুরগাছগুলি ছিলো ভেতরের দিকে। সারা গায়ে কুমিরের আঁশ। পাতাগুলো চারপাশে হেলেদুলে ছড়িয়ে থাকতো। কয়েকটা ডাল একেবারে পাতাসুদ্ধ হলুদ হয়ে ঝুলতো। সেই মাঠে ধুনকরেরা এসে পুরোনো তুলো ধুনাই করে নতুন তুলো মিশিয়ে শীত পাড়ি দেবার জন্য তৈরি করে দিতো লেপ, মাথার বালিশ। তুলো যখন ধুনাই করতো, ঢ্যাঁয়াও ঢ্যাঁয়াও করে তুলো ধুনাইয়ের যন্ত্রের শব্দ হতো সারাদিন। দিন গড়িয়ে যেতো। দুপুরে খাবার পরেই শীত লাগা আরম্ভ হতো। লেপ টেনে যখন ঠাণ্ডা পা গরম করার জন্য চেষ্টা করছি, শুনতাম মাসি তারের কাপড় টেনে তুলতে তুলতে যেন কার সঙ্গে কথা বলছে। মুখোমুখি বাড়িটা থেকে পুরুষালি গলায় কে যেন কাকে ধমক দিচ্ছে। কখনো এইসব ছাপিয়ে কানে আসতো দূরগামী ট্রেনের হুইশিল। কেমন যেন মনে হতো, এই শব্দ বা দৃশ্যাবলীর সীমানা অবধিই পৃথিবীর যা কিছু। তার বাইরে আর নেই।
কেন জানি না, শীতে আমার বিষাদ বহুগুণে বেড়ে যায়। কোনো কোনো দিন এমনও হয়, সারাদিন কিছুই ভাল লাগছে না। কোনো কোনো দিন ঘুম থেকে দেখি ভূতুড়ে কুয়াশা চতুর্দিক ঝাপসা করে রেখেছে। মাথার ওপরে আকাশ ততোধিক ধূসর। সেই ধূসর কুয়াশার মধ্যে একটিই মেঠোপথ যেন দেখা যায় শুধু। এঁকেবেঁকে সেই মেঠোপথ বহুদূর গিয়েছে। সেই পথে আবছা কয়েকজন হেঁটে যাচ্ছে। কারা তারা? তারা হয়তো সেইসব নিকটাত্মীয়, বন্ধু বা কখনো ভাললাগার মানুষ- যাদের সঙ্গে আজীবন আর কোনোদিন সাক্ষাৎ হবে না।
প্রতিবার শীত আসে। গাঢ় ধূসর কুয়াশা পড়ে আর ওই মেঠোপথের ঝাপসা মূর্তিগুলোর সঙ্গে আমার দূরত্ব বাড়তে থাকে।
শীতে শান্তির পরশ
শীতে ঘনো কুয়াশা নেমে আসে গাছের পাতায়, ঘাসে, শিশির বিন্দু জমা হয় পাতায় পাতায়। দেখে মানুষের মন ভরে ওঠে। শীতের সময় বৃষ্টি হয়না বললেই চলে। শীতে রাত বড়ো হয় দিন হয় ছোট। দেশে তখন বয়ে যায় উত্তরের ঠান্ডা হাওয়া। এসময় মানুষ আনন্দ পায় বনভোজন এবং আনন্দ ভ্রমণ করে। শীতের সবচাইতে মজার খাবার খেজুরের রস। যদিও খেজুর গাছের সংখ্যা গ্রামগঞ্জে এখন অনেক কমে আসছে। এ সময় শীতের অতিথি পাখির আগমন হয় আমাদের দেশে চিড়িয়াখানার জলাশয়ে এবং জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পুকুরে।
ছোট বেলায় মায়ের আচল ধরে শীতের অপেক্ষা করতাম। শীত এলে মায়ের প্রথম কাজ ছিলো পিঠা পুলি তৈরী করা। মা যে পিঠা তৈরী করতো তার মধ্যে ছিলো সরা পিঠা, কলার বড়া পিঠা, চান্দোশা পিঠা ইত্যাদি। পিঠাগুলি ছোট সময় মায়ের হাতেই খেয়েছি, তারপর আর সেভাবে খেতে পারিনি। আরো আকর্ষণীয় ছিলো খেজুরের গুড়ের পায়েস। মনে হতো এ পায়েস তৈরী হয়েছে মধু মিশ্রণ করে। বাড়িতে দেখেছি শীত এলেই মা লেপ নিয়ে রোদে দিয়েছে । কম্বল ট্রাংক থেকে বের করছে। চারদিকে শীতের সাজ সাজ রব।আমরা মজা কর
লেপমুড়ি দিয়ে ঘুমাতাম। এখন যে ঘুমুইনা তা নয়, তবে ছোট বেলায় মাকে দেখলেই মনে শান্তি নেমে আসতো। শীত যেনো শীত মনে হতোনা।
শীত নিয়ে গ্রামের বয়স্ক রাখুব ভয় পেতো। এক শীত গেলেই তারা ভাবতো তাদের আর একটা বছর বেঁচে থাকা হলো। শীত নিয়ে সেভাবে কেউ ভাবেনা এখন । শহরে শীতের সময় নেমে আসে উৎসবের আমেজ, ঘরে ঘরে অনেক আইটেম রান্না করা হয়, পিকনিক করা হয় এবং আনন্দ ভ্রমণ করা হয়। শীতে সাগর থাকে শান্ত তাই অনেকে পরিবার পরিজন নিয়ে ছুটে যায় সাগর পাড়ে।
ছেলে বেলার একটা ঘটনা এখনো আমার মনে পড়ে, তখন আমি স্কুলে পড়তাম। ঢাকা থেকে গ্রামে গিয়েছে এক মেয়ে ও তার ভাই, আটসাট শীতের পোশাক পরে। আমাদের গেট থেকে নামতে গিয়ে মেয়েটি তার হাই হিল স্যান্ডেলে স্লিপ কেটে একদম খালের ঠান্ডা জলে গিয়ে পড়লো। আর উঠতে পারছেনা!
তার ভাই ও নেমে যেতে ভয় পাচ্ছে। তখন আমাদের গ্রামের এক যুবক শীতের ঠান্ডা জলে নেমে তাকে উপরে নিয়ে এলো। ভিজে জুবুথুবু অবস্থা। মেয়েটি যুবকটি কে একটুও কৃতজ্ঞতা না জানিয়ে বরং চিৎকার করে বললো ‘খাল একটু ভালো করে কাটতে পারেন না’। আমরা সবাই হেসেছিলাম মেয়েটি আরও বিরক্ত হয়ে গেলো।
অনেক বিদেশি লেখক শীতকালকে নিয়ে বিভিন্ন ভাবে মূল্যায়ন করেছে, টম এলেন লেখেন ‘ শীত আমাদের চরিত্র গঠন করে এবং আমাদের সেরাটি বের করে আনে’। অনামিকা মিশরা লেখেন, ‘শীত মৌসুম নয়, এটি একটি উদযাপন’।
শীত নিয়ে যে যেমন লেখুক আমাদের মূল্যায়ন হচ্ছে শীতকাল আমাদের ক্লান্ত না করে কর্মঠ করে তোলে।
শীত এসে গেল
‘শীত এসে গেল’ তার মানে আমাদের সূর্যিমামার রাগ পড়ে গেছে, তিনি ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন, তার তেজ কমে এসেছে। শীতের এই আমেজ পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন সময়ে অনুভূত হয়। মজার ব্যাপার হলো, পৃথিবী থেকে চারশো কিলোমিটার উপরে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে যেসব নভোচারী আছেন তাদের কাছে শীত ঋতু পৃথিবীর আদলে ধরা দেয় না। কারণ, তাদের বসবাস দূর মহাশূন্যের এক ভিন্ন আবহে।
শীত এসে গেলে প্রকৃতি তার ক্রোধ হারিয়ে ধীরে ধীরে নীরবতায় অবগাহন করবে; সবুজ হারিয়ে রুক্ষ মূর্তি ধারণ করবে। উত্তর গোলার্ধের এই বাংলা মুড়ে থাকবে মিঠাকড়া রোদের আভরণে। আহা আদুরে শীত! তুই নিয়ে এলি পিঠাপুলির উৎসব! পাতা ঝরার উৎসব! শুধু কি তাই? কৃষক মাঠে যাবে ভোরের শুভ্র কুয়াশার চাদর ভেদ করে। কিশোরী কোমল পায়ে মাড়িয়ে যাবে ঘাসের ডগায় সজ্জিত ফোঁটা ফোঁটা শিশির। রাতভর গাছের পাতায় জমতে থাকবে যে শিশির, ভোরের আলো ফুটে উঠার আগেই তা টিনের চালে বৃষ্টির মতো ঝরতে থাকবে। ধানক্ষেত-শাকসব্জির উপর টলমলে শিশির বিন্দুতে সূর্যের সোনালি রশ্মিকে মনে হবে রাশি রাশি ঝলমলে মুক্তো। কখনো দিগন্তজোড়া মাঠের শেষপ্রান্তে ঘন কুয়াশার স্তরকে মনে হবে সায় দাঁড়িয়ে থাকা শ্বেত পাহাড়ের সারি। আসলে শীত যেন হলুদের বার্তা বহনকারী, মৌমাছির গুঞ্জন সৃষ্টিকারী, প্রকৃতিকে রঙে রঙে রাঙিয়ে তোলার এক বাহারি ঋতু! সরিষা, গাঁদা, সুর্যমুখির হলদে কাব্য যেন কবি হৃদয়ে ঝড় তোলে। আর নুইয়ে পড়া মটরশুঁটি শুধুই জড়িয়ে ধরতে চায় কবির পদযুগল। কনকনে শীত থেকে রেহাই পেতে নগরে-গ্রামে সর্বত্র দেখা যায় জ্যাকেট, মাফলার, সোয়েটারসহ সাজপোশাকের বৈচিত্র্য। দাপুটে শীতের আরেক প্রভাব হলো ঠোঁট ও পা ফেটে যাওয়া। ফলে প্রসাধনীর কদর বাড়ে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে পড়ে যায় শিক্ষাসফরের হিড়িক। লেপের নিচে চলে আধুনিক প্রযুক্তিতে অভ্যস্ত কিংবা আসক্ত মানুষগুলোর মোবাইল ঘাটাঘাটি। মূলত শীতের সূচনা ঘটে হেমন্তে যখন মৃদুলয়ে উত্তরীয় হাওয়া বইতে শুরু করে। জমিতে ধান কাটা শুরু হয়। বাতাসে মেলে নবান্নের গন্ধ। খেজুর রসের পায়েসের মিষ্টি ঘ্রাণে মৌ মৌ করে গ্রামের বাড়িগুলো।
প্রিয় পাঠক, এই শীত বন্দনার উপজীব্যতা কাদের জন্য জানেন? কারা সেই সৌভাগ্যবান যারা শীত আসলেই নিজেদের জীবনে বইয়ে দেয় আনন্দের ফল্গুধারা? এর উত্তরটা আমাদের সবার জানা। তবুও বলবো, এইসব সামর্থবানদের নৈতিক দায়িত্বের মধ্যে অবশ্যই বর্তায় ব্রাত্যজনদের শীতের কষ্ট অনুভব করা। হয়তো এই সুবিধাবঞ্চিত মানুষগুলোর কথা ভেবেই কবি সুকান্ত লিখেছেন,
‘হে সূর্য!/ শীতের সূর্য
তুমি আমাদের স্যাঁত স্যাঁতে ভিজে ঘরে/উত্তাপ আর আলো দিও,
আর উত্তাপ দিও/ রাস্তার ধারের ওই উলঙ্গ ছেলেটাকে।’
জীবনের এই পড়ন্ত বেলায় শীতের অনুভূতি লিখতে গিয়ে ভেতরটা হাহাকার করে উঠছে। ভাবছি কত সংক্ষিপ্ত এই জীবন! বলতে পারেন এই নীল গ্রহটিতে একটা মানুষ কতটা শীতকাল কাটিয়ে পরপারে যাত্রা করে? আমার কাছে শীত মানে আমার মৃত বাবার হিমশীতল শরীরের স্পর্শের বেদনার সঙ্গীত। গত শীতে আব্বা বেঁচেছিলেন অথচ আজ তিনি পৃথিবীর বুকে নেই! শীতের সন্ধ্যায় মাগরিবের নামাজের পর বয়োবৃদ্ধ দাদু-নানুর মাটির হাঁড়ির গনগনে কয়লায় আগুন পোহানোর দৃশ্য এখনো আমার চোখে ভাসে। তখন ঘরের কোনায় ওজুর বদনায় দেয়া হতো দাদা-নানার জন্য গরম পানি। তাঁরা সবাই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেছেন বহু আগেই। তবে কি মৃত্যু আছে বলেই বোধসম্পন্ন মানুষকে জীবনভর বিষন্নতা ঘিরে রাখে?
শীত মানে পাতা ঝরা মৌসুম
দুর্গা ঠাকুর চলে যাবার পর যেমন খারাপের চিনচিনে অনুভূতি বুকের ভেতর তিরতির করে বইতে থাকে, তারই অনুষঙ্গে হাজির হয় কার্তিক মাস। কবি বলেছেন, 'আবার আসিব ফিরে এই কার্তিকের নবান্নের দেশে..।' চুপিসারে বড় বেলার দৈর্ঘ্য 'ছোট' হয়ে যাওয়া..। দুপুরে খাওয়ার পর্ব শেষ হতে না হতেই হালকা এক শিরশিরে অনুভূতি, দিনের শেষ মুহূর্তে সূয্যি মামার কমলা রঙের আভা মাখিয়ে টুক করে ডুবে যাওয়া, এই সবই নিঃশব্দে সূচনা করে তার আগমনের। শরীরের চামড়ায় টান, ঠোঁটের ব্যক্তিগত রক্তপাত আর ভেতরে ভেতরে আরও একটা পাতা ঝরা মৌসুমের ঢোকা। এইসব মিলিয়েই ‘শীতকাল’ এসে গেলো । ' একরাশ উৎসবের আলো ঝলমলে রোশনাই হঠাৎ করে থেমে যাওয়ার পর সেই শূন্যতাকে আমরা পুনরায় ঢাকতে চাই মায়ের আরেক রূপের আবাহন দিয়ে। তাই কার্তিকের এই নিঃশব্দ পদচরণের সঙ্গেই জোড় বেঁধে আসে শীতকাল। প্রকৃতির নিজেকে নিজের রূপ, রস, বর্ণ, গন্ধ, গুনে সুসজ্জিত করে তোলার মরশুম। কারো কারো কাছে তা ভীষণ ভাবে 'অপেক্ষার ফল' আবার কারো কারোর কাছে তা 'মন খারাপের মরশুম'। মানুষের মধ্যে এই প্রকৃতিগত দৈন্যতা অনেকটাই প্রকৃতির সঙ্গে সাযুজ্যপূর্ণ। আসলে, সহজে কোন কিছুতেই খুশিনা হওয়া মনুষ্য প্রকৃতি আসলে নিজেই বোঝেনা নিজে কি চায়। তাই এই রূপান্তর নিস্তব্ধ ও নিশ্চিদ্র হলেও শীতের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে হারিয়ে যাওয়া ফিরে পাওয়ার মায়াও জড়িয়ে থাকে খানিক। প্রকৃতি ও মানুষের এই রূপ বদলের গতি খানিক শ্লথ, কিন্তু দৃঢ় ছাপ রেখে যায় বলা যেতে পারে। এটা একটা জার্নিও বলা যেতে পারে। সন্ধ্যের রাস্তায় হাঁটতে গিয়ে একটা ঝিম ধরানো গন্ধ লাগে নাকে। কারো কারো কাছে তা প্রেমের অনুসর্গ আবার কারোর কাছে তা ভাঙ্গা গড়ার স্মৃতি। ঝুমকো,
ছাতিমফুল এভাবেই হেমন্তের প্রতীক হয়ে থেকে যায় শীতকাল আসার মরশুমে..। শুধুকি তাই ? আকাশ পানে তাকালেও এই সময় বুকের ভিতর বেজে ওঠে অন্যএক 'সুর'।দূরের আকাশে জ্বলা আকাশ প্রদীপ এই সময় অন্য কারোর অস্তিত্বের কথা মনে করায়।পূর্ব পুরুষ থেকে উত্তর পুরুষের এই অবরোহন যে নিজে অস্তিত্বের কথাই প্রমাণ করে, তার চিহ্ন হিসেবেই মানুষ আকাশ প্রদীপ জ্বালায়। দীপাবলীর আগের রাতে অমানিশার ঘোরও অশুভ শক্তির বিনাশে বাড়িও তার আশে পাশে সেজে ওঠে স্নিগ্ধ প্রদীপের শিখায়।ভালোবাসার মানুষের মুখে সেই আলোক জ্যোতির বিচ্ছুরণে তার মুখের বদল হয় এ আমাদের বিশ্বাস। দহনে শুদ্ধ হয় ভালোবাসার পরাগ। এইসব কিছুকেই হেমন্তের আগমনের বার্তা ছাড়া আর কিইবা বলা যায় ?
সন্ধ্যেবেলা পাখিদের ঘরে ফেরার গান আর নতুন ধান তোলার পর তার রিক্ত বুকে জমে থাকা কুয়াশার আস্তরণ চুপিসারে জানান দেয় শীতের আগমন বার্তা। বদলে যাওয়া সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জমে থাকা অভিমান, আর অনেক আলোর মাঝে অন্ধকারকে ভালোবেসে ফেলা কোন মন যখন চুপিসারে ভিড়ের মাঝে একা হতে চায়, হেমন্তের হিম তাকে শীতল আলিঙ্গনে আবদ্ধ করে। অভিমানে গলা ব্যথা আর জ্বর সঙ্গী হয় তার। আমরা তাকে ভালোবেসে 'ঋতু পরিবর্তন' নামে ডাকি।
শীত আসার মুখে প্রকৃতি ও সাজায় নিজেকে।সবুজ পাতার খামের ভিতর হলুদ গাঁদা চিঠি লেখে।রঙিন উজ্জ্বল ফুলের মৌসুম এই শীতকাল।উজ্জ্বল গাঁদা, রক্ত বর্ণ গোলাপ আর বাহারি চন্দ্র মল্লিকা, ডালিয়ায় সেজে ওঠার মরশুম। ফুলফল সবুজ শাক সবজি শীতকাল নিজস্ব বৈশিষ্টে অনন্য।
সকালের ঘাসের আগায় টলটলে মুক্ত দানার মত শিশির বিন্দু বেলা ফুরোলে অন্তর্হিত হয়ে যায় মিঠে রোদে। সেই আবেশ মেখে মন চলে যায় সুদূর পানে।ন্যাপথলিন দেওয়া গরম জামার ভাঁজে লুকিয়ে রাখা স্মৃতিরা হঠাৎ করে রোদেলা আদর মাখতে বেরিয়ে পড়ে। আসন্ন শীতের মুখে বন্ধ ডায়েরির পাতা খুলে বেরিয়ে আসে মুহুর্তরা, তাদের কোনোটা রঙিন আর কোনটা ধূসর বর্ণ। এসব মিলিয়ে আমাদের হেমন্ত, শীতের নিস্তব্ধ আগমনবার্তা..। শীতকাল আসলে এক অসম্ভব স্পর্শকাতর সময়। এ সময় সামান্য জখমও বুকের ভিতর পর্যন্ত প্রবেশ করে। মনও শরীরে লুকিয়ে রাখা 'ক্ষত'রা সামান্য আঘাতেই রক্ত পাতে স্নাত হয়। তখন তাদের লুকোতেই বেশি করে প্রয়োজন পড়ে বোরোলিনের... তা সে যতই রূপক অর্থে হোকনা কেন ! কবিতাই বলছে ‘শীতকাল কবে আসবে সুপর্ণা ?’ অর্থাৎ রঙে – রসে -রূপে পল্লবিত হতে এবং প্রকৃতিতে শীতল কিন্তু শরীরে মনে উষ্ণ স্পর্শের কাঙাল যে আমরা সকলেই তা প্রতিবার বোঝা যায় কার্তিকের হিমেল সময় এলে। তারই পূর্ব প্রস্তুতি শুরু হয় দীপাবলির প্রদীপের ওম এ....।
ছবি: গুগল
ইঁদুর, ইঁদুর…
30 Jan 2025
5455 বার পড়া হয়েছে
হাঁটতে হাঁটতে…
23 Jan 2025
4445 বার পড়া হয়েছে
এই গিটারটা বন্দুক হয়ে যেতে পারে...
16 Jan 2025
4640 বার পড়া হয়েছে
পুরুষ নেই...
9 Jan 2025
3500 বার পড়া হয়েছে
শীতকাল ভালোবেসে…
2 Jan 2025
3695 বার পড়া হয়েছে
এত লোক জীবনের বলী…
19 Dec 2024
3350 বার পড়া হয়েছে
চিরদিন তোমার আকাশ তোমার বাতাস…
12 Dec 2024
1740 বার পড়া হয়েছে
জয়া’র জয়
5 Dec 2024
2590 বার পড়া হয়েছে
দু‘শ সেকেন্ডের সেই টেলিফোন কল
28 Nov 2024
2625 বার পড়া হয়েছে
কাফকার আঁকাজোঁকা
21 Nov 2024
2120 বার পড়া হয়েছে
স্বৈরাচার স্বৈরাচার…
14 Nov 2024
6530 বার পড়া হয়েছে
ডার্ক ট্যুরিজম
7 Nov 2024
5135 বার পড়া হয়েছে
ফেরা…
31 Oct 2024
2175 বার পড়া হয়েছে
অনুজ্জ্বল বিষের পাত্র
24 Oct 2024
1925 বার পড়া হয়েছে
ঋত্বিকের সুচিত্রা সেন
17 Oct 2024
1400 বার পড়া হয়েছে
হেমন্তের অরণ্যে পোস্টম্যান
10 Oct 2024
1950 বার পড়া হয়েছে
গোয়েন্দা কাহিনি এখন…
1 Oct 2024
1600 বার পড়া হয়েছে
ঝড়ের কেন্দ্র
19 Sept 2024
1575 বার পড়া হয়েছে
তখন হাসপাতালে…
11 Jul 2024
3805 বার পড়া হয়েছে
ছাতার মাথা ...
4 Jul 2024
2760 বার পড়া হয়েছে
আমি, তুমি ও ম্যাকবেথ…
27 Jun 2024
2920 বার পড়া হয়েছে
কফির কাপে ঝড়…
13 Jun 2024
2085 বার পড়া হয়েছে
চশমার কাচে সমুদ্র
6 Jun 2024
1980 বার পড়া হয়েছে
মেরিলিন মনরো আর রুবি রায়
30 May 2024
2480 বার পড়া হয়েছে
খুন জখমের গল্পে নারীরা...
9 May 2024
2235 বার পড়া হয়েছে
পথের মানুষ…
3 May 2024
2070 বার পড়া হয়েছে
দহন
25 Apr 2024
3050 বার পড়া হয়েছে
আয়না অনেক গল্প জানে…
10 Apr 2024
4380 বার পড়া হয়েছে
গোলাপের নিচে...
28 Mar 2024
2455 বার পড়া হয়েছে
মুখে তার...
21 Mar 2024
1570 বার পড়া হয়েছে
লেনিনের যতো ভালোবাসার চিঠি…
14 Mar 2024
2140 বার পড়া হয়েছে
আমাদের ছুটি ছুটি ছুটি...
29 Feb 2024
4790 বার পড়া হয়েছে
যদি নির্বাসন দাও
22 Feb 2024
2485 বার পড়া হয়েছে
শীত চলে গেছে পরশু...
8 Feb 2024
2435 বার পড়া হয়েছে
মনে পড়লো তোমাকে বইমেলা...
1 Feb 2024
3070 বার পড়া হয়েছে
নিজস্ব নির্জন বারান্দায়...
25 Jan 2024
2240 বার পড়া হয়েছে
ঋত্ত্বিক ঘটকের বউ…
11 Jan 2024
2670 বার পড়া হয়েছে
সুচিত্রা সেনের সানগ্লাস
4 Jan 2024
4880 বার পড়া হয়েছে
স্মৃতি পিপীলিকা…
28 Dec 2023
3830 বার পড়া হয়েছে
হাতে বোনা সোয়েটার আর…
21 Dec 2023
4205 বার পড়া হয়েছে
দেয়ালে উঠছে, দেয়াল ভাঙছে
13 Dec 2023
4065 বার পড়া হয়েছে
শীত এক মায়া
7 Dec 2023
4535 বার পড়া হয়েছে
উঁকি...
30 Nov 2023
3215 বার পড়া হয়েছে
দেশলাই জ্বালতেই…
23 Nov 2023
6570 বার পড়া হয়েছে
তোমার ও আঁখির তারায়...
9 Nov 2023
4500 বার পড়া হয়েছে
পাগল ...
26 Oct 2023
4245 বার পড়া হয়েছে
শীতের খোঁজে...
19 Oct 2023
4470 বার পড়া হয়েছে
বৃষ্টিতে থাকলো নির্জন সাইকেল...
5 Oct 2023
5875 বার পড়া হয়েছে
নারী ভয়ংকর
28 Sept 2023
9330 বার পড়া হয়েছে
তবুও সন্ধ্যা আসে…
14 Sept 2023
5985 বার পড়া হয়েছে
হিটলারের নেশা
7 Sept 2023
8355 বার পড়া হয়েছে
ক্লাপারবোর্ড
31 Aug 2023
12220 বার পড়া হয়েছে
মোনালিসার গোয়েন্দারা
23 Aug 2023
2545 বার পড়া হয়েছে
খেলা যখন…
15 Jun 2023
2390 বার পড়া হয়েছে
ইতি, চায়ের দোকান...
1 Jun 2023
4910 বার পড়া হয়েছে
লেখকদের ঘরবাড়ি
10 May 2023
2045 বার পড়া হয়েছে
মেয়েরা প্রেমের চিঠি লেখে না
20 Apr 2023
5115 বার পড়া হয়েছে
বৈশাখে আঞ্চলিক খাবার..
13 Apr 2023
1820 বার পড়া হয়েছে
স্ট্রিট ফাইটিং ইয়ার্স...
6 Mar 2023
1915 বার পড়া হয়েছে
হাওয়ায় লেগেছে শরতের গন্ধ।
4 Jan 2023
2475 বার পড়া হয়েছে
রাজনৈতিক ফুটবল
4 Jan 2023
2505 বার পড়া হয়েছে
হাসপাতাল থেকে…
23 Jun 2022
1650 বার পড়া হয়েছে
একলা মাদুর…
16 Jun 2022
1300 বার পড়া হয়েছে
পালাতে হয়েছিলো মোনালিসাকে
7 Jan 2021
2310 বার পড়া হয়েছে
হেমন্তের অরণ্যে পোস্টম্যান
29 Oct 2020
1890 বার পড়া হয়েছে
গডফাদার ৫২ বছরে
22 Oct 2020
1810 বার পড়া হয়েছে
দানব অথবা দানবীয়...
8 Oct 2020
1445 বার পড়া হয়েছে
দুই শীতের মাঝখানে
1 Oct 2020
1595 বার পড়া হয়েছে
আরেক বিভূতিভূষণ...
17 Sept 2020
1280 বার পড়া হয়েছে
আয়নায় একা উত্তম...
3 Sept 2020
1360 বার পড়া হয়েছে
দ্বিতীয় পথের পাঁচালী
27 Aug 2020
1725 বার পড়া হয়েছে
ভালো না-বাসার কাল
13 Aug 2020
1265 বার পড়া হয়েছে
যতদূর থাকো ফের দেখা হবে
5 Aug 2020
1460 বার পড়া হয়েছে
বিপজ্জনক মানিক
2 Jul 2020
1275 বার পড়া হয়েছে
নিখোঁজ হয়েছিলেন আগাথা ক্রিস্টিও
23 May 2020
1165 বার পড়া হয়েছে
আমাকে মনে পড়ে?
14 Apr 2020
1120 বার পড়া হয়েছে
আমি ইতালী থেকে লিখছি...
29 Mar 2020
1250 বার পড়া হয়েছে
পৃথিবীর গভীর গভীরতর অসুখ এখন...
12 Mar 2020
1680 বার পড়া হয়েছে
মুখোমুখি বসিবার...
27 Feb 2020
1240 বার পড়া হয়েছে
শীতে ভালোবাসার পদ্ধতি
6 Feb 2020
2535 বার পড়া হয়েছে
হিব্রু ভাষায় কাফকার চিঠি
30 Jan 2020
1255 বার পড়া হয়েছে
ইভা ব্রাউনের অন্তরাল
23 Jan 2020
1360 বার পড়া হয়েছে
শীতের স্মৃতি
9 Jan 2020
1440 বার পড়া হয়েছে
কেক কুকিজের গন্ধে ...
24 Dec 2019
1125 বার পড়া হয়েছে
জুতার ভেতরে...
19 Dec 2019
1055 বার পড়া হয়েছে
খুন হয়েছিলেন আলবেয়ার কামু
12 Dec 2019
1620 বার পড়া হয়েছে
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের চাকরিবাকরি
5 Dec 2019
1175 বার পড়া হয়েছে
পৃথিবী বিখ্যাত পোস্টার যত
28 Nov 2019
1650 বার পড়া হয়েছে
পেঁয়াজের পিঁয়াজী
21 Nov 2019
1360 বার পড়া হয়েছে
সিনেমায় দু’চাকার ঝড়
14 Nov 2019
1070 বার পড়া হয়েছে
শেষদৃশ্যে জুলিয়াস ফুচিক
7 Nov 2019
1485 বার পড়া হয়েছে
অভিমানে কি দেশ ছাড়বেন সাকিব
31 Oct 2019
1090 বার পড়া হয়েছে
ফ্রাঙ্কেনস্টাইনের দানবেরা
17 Oct 2019
1870 বার পড়া হয়েছে
স্বপ্ন, দু:স্বপ্নের পুরুষ
10 Oct 2019
1310 বার পড়া হয়েছে
স্মৃতির রুমালে শিউলি...
3 Oct 2019
2985 বার পড়া হয়েছে
নির্ঘুম শহরে...
26 Sept 2019
1405 বার পড়া হয়েছে
ধূসর পাণ্ডলিপি
19 Sept 2019
1410 বার পড়া হয়েছে
এক্সপোজড...
12 Sept 2019
1170 বার পড়া হয়েছে
নারী ও শাড়ি ...
5 Sept 2019
1340 বার পড়া হয়েছে
পথের পাঁচালী’র ৬৪
29 Aug 2019
1330 বার পড়া হয়েছে
প্রেম আর যৌনতায় তারা
22 Aug 2019
1140 বার পড়া হয়েছে
যৌনতায়, বিদ্রোহে তাঁরা...
1 Aug 2019
1175 বার পড়া হয়েছে
খুনের সময়ে...
25 Jul 2019
1215 বার পড়া হয়েছে
পথ...
11 Jul 2019
1270 বার পড়া হয়েছে
যে কোন দলই ছিটকে পড়তে পারে
27 Jun 2019
1375 বার পড়া হয়েছে
বৃষ্টিকাল কবে আসবে নন্দিনী
20 Jun 2019
1685 বার পড়া হয়েছে
স্নানঘরের গান...
2 Jun 2019
1290 বার পড়া হয়েছে
আমার কোনো ভয় নেই তো...
23 May 2019
1220 বার পড়া হয়েছে
রেখার ফারজানা...
2 May 2019
1170 বার পড়া হয়েছে
হিংসায় উন্মত্ত পৃথিবী
25 Apr 2019
2530 বার পড়া হয়েছে
নীলকন্ঠ পাখির খোঁজে...
18 Apr 2019
1350 বার পড়া হয়েছে
আপুদের পথের ভাই ...
4 Apr 2019
1430 বার পড়া হয়েছে
আমাদের প্রাণের বাংলা
28 Mar 2019
1515 বার পড়া হয়েছে
ক্যানভাসে ঝরে পড়া অসুখ
21 Mar 2019
1100 বার পড়া হয়েছে
শেষদৃশ্যে লোরকা
14 Mar 2019
1415 বার পড়া হয়েছে
নেশার ঘোরে লেখক
7 Mar 2019
1650 বার পড়া হয়েছে
একটি বইয়ের গল্পের সঙ্গে...
1 Mar 2019
1535 বার পড়া হয়েছে
বই করেছি চুরি...
21 Feb 2019
2730 বার পড়া হয়েছে
সকালবেলার গুলজার
7 Feb 2019
1275 বার পড়া হয়েছে
বইমেলায় প্রেম...
31 Jan 2019
1125 বার পড়া হয়েছে
অ্যান্ড এ স্পাই...
24 Jan 2019
1875 বার পড়া হয়েছে
আপনার সন্তান কি নিরাপদ
10 Jan 2019
1180 বার পড়া হয়েছে
পুষ্পহীন যাত্রাশেষে মৃণাল সেন
3 Jan 2019
1085 বার পড়া হয়েছে
নিষিদ্ধ যতো বই আর সিনেমা
13 Dec 2018
2020 বার পড়া হয়েছে
অসুখী মানুষ
6 Dec 2018
1375 বার পড়া হয়েছে
দাম্পত্য সম্পর্কে #MeToo
29 Nov 2018
1425 বার পড়া হয়েছে
দুই নম্বরি...
22 Nov 2018
1240 বার পড়া হয়েছে
অশ্লীল গল্প
8 Nov 2018
2785 বার পড়া হয়েছে
ফুলগুলো সরিয়ে নাও, আমার লাগছে
1 Nov 2018
2240 বার পড়া হয়েছে
লাভ রানস ব্লাইন্ড
25 Oct 2018
1150 বার পড়া হয়েছে
শেষ দৃশ্যে মান্টো
18 Oct 2018
1400 বার পড়া হয়েছে
আমাদের সেই বারান্দায়...
11 Oct 2018
1160 বার পড়া হয়েছে
শীতকাল কবে আসবে সুপর্না?
4 Oct 2018
1475 বার পড়া হয়েছে
কোমায় আমাদের সিনেমা
20 Sept 2018
1275 বার পড়া হয়েছে
আজো বিভূতিভূষণ...
13 Sept 2018
1290 বার পড়া হয়েছে
ভীষণ অচেনা ও একা...
6 Sept 2018
1040 বার পড়া হয়েছে
গোপন কথা...
9 Aug 2018
1305 বার পড়া হয়েছে
খোলা চিঠি ও চুমু
26 Jul 2018
1615 বার পড়া হয়েছে
ফ্রিডা কাহলো এক সূর্যমুখী ফুল
19 Jul 2018
985 বার পড়া হয়েছে
ঝিনুক নীরবে সহো...
5 Jul 2018
1340 বার পড়া হয়েছে
ফুটবল- রঙ্গ ভরা বঙ্গে
28 Jun 2018
1190 বার পড়া হয়েছে
জানালা কী জানালো...
11 Jun 2018
1935 বার পড়া হয়েছে
বিষয় বাসনা
19 Apr 2018
1595 বার পড়া হয়েছে
মনের রঙ...
15 Feb 2018
1340 বার পড়া হয়েছে
দাড়ি কান্ড...
18 Jan 2018
2035 বার পড়া হয়েছে
চোর, চোর...
28 Dec 2017
3265 বার পড়া হয়েছে
বাঙালির আহার...আহা রে...
21 Dec 2017
1915 বার পড়া হয়েছে
চরণ ধরিতে দিয়ো গো আমারে...
7 Dec 2017
2530 বার পড়া হয়েছে
ব্রুটাস তুমিও!
23 Nov 2017
1435 বার পড়া হয়েছে
কি বললেন সরয়ার ফারুকী...
2 Nov 2017
1405 বার পড়া হয়েছে
স্বত্ব © ২০১৬ - ২০২৩ প্রাণের বাংলা।
সম্পাদক ও প্রকাশক: আবিদা নাসরীন কলি।
Email: Article: [email protected], Avertising: [email protected]
Phone: +8801818189677, +8801717256199